বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
দেশের নন্দিত অভিনয়শিল্পী অরুণা বিশ্বাস। একাধারে তিনি মঞ্চ, টিভি এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। পাশাপাশি তিনি নির্মাতাও। কিছু দিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছোট ও বড় পর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু টিভি নাটকও নির্মাণ করেছেন। অরুণা বিশ্বাস পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘অসম্ভব’ আজ মুক্তি পাচ্ছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ যাত্রাপালার গল্প নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।
অভিনয় থেকে নির্মাণ যাত্রা… অসম্ভব ভালো লাগার একটি বিষয়। নির্মাণের ব্যাপারটি তো আগেও ছিল। সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক নির্মাণ করেছি। অভিনয়ের আলাদা একটা মজা আছে। নির্মাণের ক্ষেত্রেও তেমনি কিছু ব্যাপার থাকে। আমি খুব উপভোগ করেছি। শিল্পীরা খুব সহযোগিতা করেছেন। আমার মনে হয় ভালো একটি কাজ হয়েছে।
‘অসম্ভব’ কেন দেখবে দর্শক… ‘অসম্ভব’ প্রেমের চলচ্চিত্র, দেশের সিনেমা, আমাদের সিনেমা। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের গল্প মৌলিক। একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রে যা যা থাকে তার সবই আছে। সব মিলিয়ে দর্শকরা হতাশ হবেন না। আমার অনেক প্রত্যাশা এই সিনেমা ঘিরে।
যাত্রাশিল্পী পরিবারের গল্প… এক দমই না। অনেকেই হয়তো ভেবেছেন যাত্রাশিল্পী হিসেবে আমার বাবা অমলেন্দু বিশ্বাস এবং মা জ্যোস্না বিশ্বাসের গল্প। আসলে তা নয়। ‘অসম্ভব’ চলচ্চিত্রটি আসলে দেশের প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পুরো যাত্রাশিল্পের গল্প। এটি পুরোপুরি একটি কমার্শিয়াল চলচ্চিত্র। শুধু আমাদের পরিবারের গল্প নয়।
‘অসম্ভব’ যেভাবে সম্ভব হলো… ২০২১ সালে মানিকগঞ্জে চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি যাত্রাশিল্প ও যাত্রাশিল্পীদের নিয়ে একটা গল্প বলতে, যা অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নটা পূরণ হতে যাচ্ছে। আরও ভালো লাগছে এজন্য যে সাধারণ খুব কম কাজ হয়েছে এমন একটি বিষয় চলচ্চিত্রের জন্য বেছে নিতে পেরেছি বলে।
শিল্পীদের অভিনয় প্রসঙ্গে… ‘অসম্ভব’ প্রত্যেকশিল্পী তার নিজ নিজ জায়গা থেকে যথেষ্ঠ ভালো করেছেন। আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ যে, আমার চলচ্চিত্রের শিল্পীরা তাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। শিল্পের প্রতি তাদের ডেডিকেশন আমাকে সত্যি অবাক করেছে। এ সিনেমা প্রত্যেকের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে বলব, আবুল হায়াত, সোহানা সাবা, শাহেদ, শতাব্দী, স্বাগতা, গাজী আবদুন নূরসহ সবাই খুব সাপোর্ট দিয়েছেন আমাকে। অভিনেত্রী স্বাগতা তো পাঁচটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমার প্র্ায় সব চরিত্রই অসম্ভব সুন্দর।
বর্তমান চলচ্চিত্রশিল্প নিয়ে… আমাদের দেশের এই ইন্ডাস্ট্র্রি এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। বাজেট বেড়েছে। শিল্পীরা নানা প্ল্যাটফর্মে কাজ করছেন। তরুণরা অনেক বেশি সিরিয়াস। চলচ্চিত্রশিল্প নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী।
শিল্পী জীবনের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি.. প্রাপ্তি সবই, অপ্রাপ্তি কিছুই নেই। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, অনেক মানুষের স্নেহ পেয়েছি। এসব আসলে অর্থকড়ি দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। সুতরাং একজন শিল্পীর জীবনে মানুষের ভালোবাসা এবং সম্মানটাই হলো সবচেয়ে বড় পাওয়া।
দর্শকদের উদ্দেশে… একটাই কথা, আপনারা আমাদের দেশের নির্মিত চলচ্চিত্র দেখুন, আমাদের নিজেদের চলচ্চিত্র শিল্প এবং সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করুন। আমি মনে করি, আপনারা দর্শকরা যদি আমাদের মতো চলচ্চিত্র শিল্পের পাশে থাকে এই শিল্পের মানুষের পাশে থাকেন তো এই শিল্পটি আরও এগিয়ে যাবে।