শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৯ অপরাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোর শহরের আইকনিক ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুর একটা বড় অংশ জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে নদীতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই জাহাজের ২০ ভারতীয় ক্রুদের সবাই দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে রয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর থেকেই জাহাজেই অবস্থান করছেন নাবিকরা। তারা সেখানে বিভিন্ন বিভাগ ও তদন্ত কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন এবং সেই সঙ্গে রুটিন সব কাজই করছেন। সহসাই জাহাজ ছেড়ে সম্ভাবনাও নেই ক্রুদের।
ক্রুরা জানিয়েছেন, তারা দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি কর্মকর্ত ও তদন্ত দলের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। ভেঙ্গে পড়া সেতুর ধ্বংসাবশেষ সরানো না পর্যন্ত তাদের কেউই জাজাহ ছেড়ে যাবেন না। সেতুর পিয়ারে ধাক্কা দেয়ার পর শত শত টন স্টিলের কড়ি বরগা জাহাজটি উপর, এতে করে জাহাজটি সরানো যাচ্ছে না।
জাহাজটি সরাতে ভেঙে পরা সেতুর অংশগুলোকে উত্তোলন করা হবে। তারপর নদীর তল থেকে ইস্পাত এবং কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা হবে। এরপরই জাহাজটি ডকইয়ার্ডে নেয়া হবে। সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী ডালি নামের জাহাজটি চার হাজার ৭০০টি কন্টেইনার নিয়ে শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছিলো।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত একজন ক্রুকে বাল্টিমোরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে চিকিৎসা শেষে আবারও জাহাজে ফিরেছেন। ক্রুদের যথেষ্ট পরিমাণে খাবার এবং পানি রয়েছে, জেনারেটরগুলো চালু রাখার জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানিও রয়েছে।
ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে, জাহাজটি মুক্ত করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যস্ত বন্দরে চ্যানেলটি পুনরায় চালু করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। শনিবার, মেরিল্যান্ডের গভর্নর বলেছেন, কর্মকর্তারা ধ্বংসাবশেষের প্রথম টুকরো অপসারণের পরিকল্পনা করেছেন।
ইউএস কোস্ট গার্ডের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরেথ বলেছেন, ধসে পড়া সেতুটির যেসব অংশ এখনও ঝুলে আছে, সেগুলো নির্দিষ্ট মাপে কেটে সরাতে হবে। এর জন্য সঠিক পরিকল্পনা বের করতে কাজ চলছে। বর্তমানের তিনটি ক্রেনের সঙ্গে দ্রুত আরও একটি ক্রেন যুক্ত হবে।
তবে জাহাজটি কখন ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করা হবে, তার কোনো সঠিক সময় বলা যাচ্ছে না। তবে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) এবং কোস্ট গার্ড তাদের তদন্ত শেষ করলে, জাহাজের ক্রুদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা হবে। তখন রুটিন কাজের জন্য নতুন আরেকটি দলকে আনা আসা হবে।
সিঙ্গাপুর-পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজ ডালি বিদ্যুৎ হারিয়ে গেলো মঙ্গলবার সেতুটির একটি কংক্রিটের পিয়ারে বিধ্বস্ত হয়। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রায় পুরো সেতুটি ভেঙে পড়ে। কি কারণে এই দুর্ঘটনা, সেটি জানতে এরিমধ্যে তদন্ত শুরু করে আমেরিকার বিভিন্ন সংস্থা।
অন্ধকারে জাহাজের আলো নিভে যাওয়ায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ক্রুরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেতুর সজোরে আঘাত করে ডালি। তবে তার আগে স্থানীয় সময় রাত দেড়টার কিছু আগে তারা একটি ‘সাহায্যের বার্তা’ জারি করে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে যে, একটি সংঘর্ষ হতে চলেছে।