বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ অপরাহ্ন
৩ দিনের সফরে ঢাকা ঘুরে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার এটিই প্রথম ঢাকা সফর।
লুর ঢাকা আসা নিয়ে কথার লড়াইও হয়েছে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাঝে। এখন আলোচনায় ৩ দিনের সফরে বাংলাদেশকে কী বার্তা দিয়ে গেলেন এই মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী?
এবার ঢাকায় এসে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের পাশাপাশি সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ে বৈঠক করেছেন ডোনাল্ড লু। এ নিয়ে প্রশ্ন না নিলেও গণমাধ্যমে ব্রিফ করে বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনের আগে-পরে বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থাকলেও এখন সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করতে চায় ওয়াশিংটন।
তাই দুই দেশের মানুষের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি, সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রমনীতির সংস্কার ও মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সহযোগিতা চায় বলে লুয়ের বক্তব্যে উঠে এসেছে।
লুয়ের বক্তব্যে এসেছে দ্বিপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও। যার মধ্যে জলবায়ু, শিক্ষা সহায়তা বৃদ্ধি, নতুন বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ খাত, প্রযুক্তি, ট্যাক্স-পে আধুনিকায়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতে কাজ করতে ইতিবাচক সহযোগিতা চায়।
তবে, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রমনীতির সংস্কার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুগুলোতে অবস্থান পরিবর্তনের তেমন সুযোগ নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সাহাব এনাম খান বলেন, লুর সফরে যেসব ক্রিয়েটিভ সল্যুয়েশনের বার্তা এসেছে, যেমন দুর্নীতি, স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তি— এগুলো নিয়ে বিস্তর আলোচনা হওয়া দরকার। তার সফরটি উল্লেখযোগ্য, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত আসলে কেন? বিশ্লেষকদের মতামত, মূলত মার্কিন নির্বাচন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ব্যাপক জনমত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয়গুলো ডেমোক্র্যাটদের নীতিতে হয়তো কিছুটা পরিবর্তন আনছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক আমেনা মহসিন বলেন, তাদের যে কতগুলো মূলনীতি, যেমন তারা যেটা বলে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও গণতন্ত্র— এসবে তাদের মনোযোগ থাকবে। একইসঙ্গে তারা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাচ্ছে।
এদিকে, লুর সফর নিয়ে শুরুতে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা বেশ সরব থাকলেও সফর শেষে তেমন উত্তাপ ছড়ায়নি। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্যই দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে, এমনটা বলছেন বিশ্লেষকরা।