বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশিরভাগ সময় ছোট দল গুলো বড় দল গুলোর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ছোট দল গুলোর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বড় দল গুলো। তবে এখনো পর্যন্ত যে কয়টি ম্যাচ হয়েছে তাতে ছোট দল গুলো তেমন পরীক্ষা নিতে পারেনি বড় দল গুলোর। গতকাল যেমন উগান্ডাকে একরকম ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। কোন ধরনের লড়াইতো দূরের কথা নিজেদের অস্তিত্বও টিকিয়ে রাখতে পারেনি। বড় লজ্জায় ডুবতে হয়েছে আফ্রিকার দলটিকে। রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাটিং ঝড়ের পর ফজল হক ফারুকির পেস আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল উড়ান্ডা। আফগানিস্তানের ১৮৩ রানের জবাবে মাত্র ৫৮ রানে গুটিয়ে যায় উগান্ডা। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এটিই উগান্ডার সর্বনিম্ন স্কোর। এছাড়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর চেয়ে কম রানে অল আউট হওয়ার নজির আছে শুধু দুই দেশের। এদের মধ্যে নেদারল্যান্ডস ৩৯ ও ৪৪ রানে অল আউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৫ রানে অল আউট হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। উগান্ডাকে গুড়িয়ে দেওয়ার নায়ক আফগান পেসার ফজল হক ফারুকি। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন ফারুকি। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি। ২০২১ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মুজিব উর রাহমান। সব মিলিয়ে তালিকার চার নম্বরে এখন ফারুকি। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে বাঁহাতি পেসারের হাতেই। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানকে বড় জয়ের ভিতটা গড়ে দেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটিতে ১৫৪ রান যোগ করেন তারা দুজন। বিশ্বকাপে প্রথম উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি আর মাত্র একটি। গত আসরে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের অ্যালেঙ হেলস ও জস বাটলার করেছিলেন অবিচ্ছিন্ন ১৭০ রান। প্রথম ৬ ওভারে ৬৬ রান করে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে এটিই তাদের সর্বোচ্চ। নবম ওভারে ২৮ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন গুরবাজ। পরের ওভারে একশ ছুঁয়ে ফেলে আফগানরা। দ্বাদশ ওভারে ইব্রাহিমের ফিফটি হয় ৩৪ বলে। শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় উগান্ডা। ১৫ তম ওভারে ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন ব্রায়ান মাসাবার। ৪৬ বলে ৯টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রান করেন তিনি। পরের ওভারে গুরবাজকে থামান রামজানি। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস ৪৫ বলে ৭৬ রান করে ফিরেন তিনি। ৪টি করে চার ও ছক্কায় সাজান ইনিংস। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর আর কেউই দায়িত্ব নিতে পারেননি। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নাবি ১৬ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর তাতে ১৮৩ রানে থামে আফগানিস্তান। উগান্ডার পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২১ রানে ২ উইকেট নেন মাসাবা। ১৮৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বলে বাউন্ডারি ছাড়া আর কোনো আনন্দের উপলক্ষ্য পায়নি উগান্ডা। প্রথম ওভারে রোনাক ও রজার মুকাসাকে ফেরান ফারুকি। পরের ওভারে সাইমন সেসাজিকে আউট করেন মুজিব। পঞ্চম ওভারে নাভিন উল হাক তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট নিলে পাওয়ার প্লেতেই ব্যাটিং লাইন–আপের অর্ধেক হারিয়ে ফেলে উগান্ডা। ছয় ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা করে ২১ রান।
বিশ্বকাপের সর্বনিম্ন স্কোরের দিকে তখন হাটছিল উগান্ডা। ১৩তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে ফারুকি প্রথম দুই বলে ফেরান রিয়াজাত আলি শাহ ও মাসাবাকে। ম্যাচে দ্বিতীয়বার হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও তা করতে পারেননি ফারুকি। তবে ওভারের শেষ বলে আরেকটি উইকেট তুলে নিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। আর উগান্ডা অল আউট হয় ৫৮ রানে। দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফজল হক ফারুকি।