শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১৪ অপরাহ্ন
তাসকিন আহমেদ ও নুরুল হাসান সোহান। দুজনের ক্যারিয়ারেই এবারের বিশ্বকাপ অন্যরকম শুরু এনে দিচ্ছে। বিশ্বকাপের আমেজ আগেও গায়ে মেখেছেন তারা। তাসকিন আহমেদ তো ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। এরপরই বিধি বাম। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকলীন বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়ায় দল থেকে ছিটকে যান। এরপর জাতীয় দলই তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল যেন। ২০১৯-এ ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ দলে ডাক পাননি। অবশেষে অনেক চেষ্টার পর আবার জাতীয় দলে ফিরলেন। ভালো করলেন। আরেকটি বিশ্বকাপের সামনে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বোলার।
সোহানকে অবশ্য ছিটকে পড়তে হয়নি এভাবে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে তিনিও ছিলেন। কিন্তু বেঞ্চ গরম করেই কাটাতে হয়েছে। মুশফিকুর রহিমের বদলি হিসেবে ওই আসরে গেলেও খেলেননি কোনো ম্যাচ। এরপর দলের বাইরে গিয়ে তারও জাতীয় দল থেকে দূরে সরে যাওয়া। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নজর কেড়ে আবার জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। দৃশ্যপট এতটাই ঘুরে গেছে যে গতবার বেঞ্চ গরম করা সোহান এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এক নম্বর কিপার। তাই দুজনের ক্যারিয়ারেই এবার ফিরে আসার বিশ্বকাপ। নতুন করে ‘বিশ্বকাপ’ শুরুও।
বুধবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দুই ক্রিকেটারই অতীত ভুলতে চাইলেন। নতুন শুরুটা নতুন করেই করতে চান তারা। শূন্য থেকে শুরু করে এবার স্মরণীয় করে রাখতে চান নিজেদের বিশ্বকাপ। ২০১৬ ও ২০১৯ ভোলার কথা বলে তাসকিন বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে দুইটা স্মৃতিই আলাদা আলাদা…যেগুলো অতীত, বর্তমানেই নজর দিতে চাই। আর সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন আর ভালো করতে পারি। আমি অনেক খুশি যে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছি এবার। আমি খুব রোমাঞ্চিত যে খেলতে পারব ইনশাল্লাহ।’ সোহানও বিশ্বকাপ দলে থাকতে পেরে আনন্দিত। তবে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দলে ফিরতে পারাকেই তৃপ্তির বললেন, ‘শুধু বিশ্বকাপ না আমার কাছে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আমিই না, যারা বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলে সবার জন্যই এটা গুরুত্বের। আর যে কোনো দলের বিপক্ষেই বাংলাদেশের হয়ে খেলা একটা গর্বের ব্যাপার।’
গত দুই সিরিজ বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম ছিল। এই সিরিজের লক্ষ্য ছিল জেতা। বিশ্বকাপ সামনে রেখে শুধু সাফল্যটুকু নেওয়ার ছিল। দল সংশ্লিষ্ট সবাই তাই জয়কেই প্রধান্য দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য ওমানে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে নজর দিচ্ছেন আলাদা করে। তাসকিন ও সোহানও মনে করেন অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ দুটির আত্মবিশ্বাস বিশ্বকাপে ভালো করতে সাহায্য করবে। আর কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার শুরুটা তারা করবেন ওমানে গিয়ে। শুধু ওমান কেন আরব আমিরাতের পরিবেশে তাসকিন একদমই নতুন। তার ওপর জিম্বাবুয়ের পর ম্যাচ অনুশীলন নেই তার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে নেমে রান দিয়েছেন প্রচুর। তাই ছুটির মধ্যেও মিরপুরে অনুশীলনে এসে নিজেকে কোন পরিকল্পনায় তৈরি করছেন তা জানালেন এ পেসার, ‘কন্ডিশনের কারণে গত দুইটা টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটা ম্যাচ খেলা হয়েছে। প্রস্তুতি অনুযায়ী ওটিস গিবসন ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। ওমানে গিয়েও আমরা বেশ কিছু সময় পাব। কন্ডিশন যাই হোক সেই পরিকল্পনামাফিক প্রয়োগ করতে হবে। যখন কাটার কম ধরে তখন ইয়র্কার বা লেংথ বলের প্রয়োগটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে। আইসিসি ইভেন্ট যেহেতু। ধারণা, ফ্ল্যাট ট্র্যাক বা স্পোর্টিং উইকেট হবে। চ্যালেঞ্জিং হবে বোলারদের জন্য তবে একই সময়ে প্রয়োগটা ভালোভাবে করতে পারলে ভালো করার সুযোগও থাকবে।’
কন্ডিশন নিয়ে অবশ্য অত ভাবছেন না সোহান। তার বিশ্বাস বাংলাদেশের মতোই পরিবেশ থাকবে। সোহানের আসল চিন্তা কিপিংয়ের মতো গুরুদায়িত্ব ভালোভাবে সামলানো, ‘সব থেকে বড় হলো দুই তিন বছর যখন জাতীয় দলের বাইরে ছিলাম তখন থেকে আমার মানসিকতা পরিবর্তন করতে পেরেছি। এখন খুব বেশি কিছু চিন্তা করি না। দলের জয়ে ভূমিকা রাখার জন্য যে দায়িত্ব থাকে সেটা পালন করাই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা অনুযায়ী কঠিন পরিশ্রম করতে চাই, অনেক কিছু যেগুলো আমার আয়ত্তে নেই, ভবিষ্যৎ বা অতীত নিয়ে খুব একটা ভাবি না।’