সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২৫ অপরাহ্ন
দেশে ফিরছেন বিএনপির বহুল আলোচিত সাবেক যুগ্ম মহাসচিব বর্তমানে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ঈদের আগেই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। যা অনেকটাই নিশ্চিত বলে পরিবারের দাবি।
ইতোমধ্যেই ভারত সরকারের পক্ষে শিলং পুলিশ এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে গোহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন কর্তৃপক্ষ সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তাকে ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে দেশে পাঠানোর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশে ফিরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বিদেশ যাওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় গত ৮ জুন থেকে। এদিন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জনকূটনীতি) মোহাম্মদ রফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশে ফিরতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বিক সহযোগিতা করছে। এমনকি মন্ত্রণালয়ের সম্মতি প্রদানের বিষয়টি ভারতের গোহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সালাহউদ্দিন আহমেদ ইতোমধ্যেই গোহাটি মিশন অফিসে সশরীরে হাজির হয়ে দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে তার স্ত্রী বিএনপির সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ বলেন, সহসাই তার স্বামী দেশে ফিরছেন। তার ধারণা ঈদের আগেই তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। যা অনেকটাই নিশ্চিত।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই ভারত সরকারের তরফ থেকে শিলং পুলিশ ও বাংলাদেশের গোহাটি মিশন কর্তৃপক্ষ তার স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। দেশে ফেরার জন্য তার স্বামী গোহাটি মিশনে আবেদন করেছেন। ট্রাভেল পাস দিয়ে তাকে দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই দেশে ফেরার পরেই তার উন্নত চিকিৎসা করানো জরুরি। সে ক্ষেত্রে দেশ বা দেশের বাইরে সিঙ্গাপুরও পাঠানো হতে পারে।’
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক তার স্বামীর দেশে ফিরতে বাধা নেই বলে রায় দেন। এরপরই তার স্বামীর দেশে ফেরার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। আদালতের রায়ের পর তার স্বামী ভারতের গোহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেন।
আবেদনের বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় গোহাটি মিশন। দেশে ফিরতে সালাহউদ্দিন আহমেদকে ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস দেওয়া যাবে বলে গোহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনকে জানিয়ে দেয় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী আরও জানান, ভারত সরকারের কাছে মানবিক কারণে তার স্বামীকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ভারত সরকার আবেদনপত্রটি আমলে নেয়। কিন্তু সিঙ্গাপুরে পাঠানোর আইনগত সুযোগ না থাকায়, সে দেশের সরকার ওই সময় তার স্বামীকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে উন্নত চিকিৎসা সেবা দেয়। তিনি বলেন, ট্রাভেল পাস পাওয়ার পর ভারত থেকেই তিনি সরাসরি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তাকে শুধুমাত্র দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি সারাদেশে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচি চলাকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদের নামে বিবৃতি প্রকাশিত হচ্ছিল। ওই কর্মসূচিকে ঘিরে প্রায় তিন হাজার যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আহত হয় প্রায় ২ হাজার মানুষ। যাদের মধ্যে প্রায় পাঁচশ’ জন চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ২০১৫ সালের ১১ মার্চ সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকোরিয়া) আসনের বিএনপির সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ দাবি করেন, ১০ মার্চ রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তার স্বামীকে তুলে নেওয়া হয়। ঘটনায় রীতিমত হৈ-চৈ পড়ে যায়। দেশ-বিদেশ থেকে বিবৃতি ও প্রতিবাদ প্রকাশিত হতে থাকে।