সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই গণমাধ্যমের ওপর আঘাত হেনেছে সরকার। বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। বিশেষ করে বিরোধীদলের মুখপাত্র টিভি চ্যানেল, পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রকৃত সাংবাদিকরা আজকে কাজ করতে পারছেন না। তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এদের সংখ্যা কোনো অংশে কম নয়। আগামী দিনে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করার জন্য বিএনপি মিডিয়া সেল গঠন করেছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি গঠিত মিডিয়া সেলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণে যখন গণমাধ্যমে তাদের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে তখন মিডিয়া সেল গঠন করা হয়েছিল। দেখতে দেখতে আজকে এক বছর পূর্ণ করেছে। এরই মধ্যে জামালপুরে এক সাংবাদিককে হত্যা করেছে স্থানীয় এক চেয়ারম্যান। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে কিছু ঘটনা ঘটছে অথচ গণমাধ্যমে তা প্রকাশিত হচ্ছে না। কিছুদিন আগে এক অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। স্ত্রীর ভাই স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অথচ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার না করে অ্যাপার্টমেন্টের কেয়ারটেকারকে গ্রেপ্তার করে ১০ দিন ধরে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাড়ির কেয়ারটেকারের মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে পুলিশের হেফাজতে কিভাবে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কয়েকদিন আগে নওগাঁয় একজন কর্মজীবী নারীকে রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে নির্যাতন করে হত্যা করেছে র্যাব। একজন সচিবের নির্দেশে তুলে নেওয়া হলেও ওই নারীর নামে কোনো মামলা ছিলো না, কোন দল করেন না। মৃত্যুর পর তার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যার চার্জশিট প্রদানে বারবার সময় নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে দেশে যে সঙ্কট তা রাজনৈতিক কারণে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। স্বাধীনতার পরও একইভাবে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছিলো। বর্তমানে যে নির্বাচন হয় তা নিয়ে বলতে চাই না। সে ধরণের আরেকটি নির্বাচন করতে চাইছে সরকার। অতীতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু এখন পারছে না। আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সে জন্য আমরা বলেছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে নির্বাসিত রয়েছে। সরকার গত ১৪ বছরে ৬শ’ মানুষকে গুম করেছে, সহস্ত্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। শুধুমাত্র ভিন্ন মত পোষণ করার কারণে কয়েক লক্ষাধিক মামলা করা হয়েছে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। আগামীতে যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় সে জন্য আমরা দশ দফা দাবি জানিয়েছি। রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামতে ২৭ দফা ঘোষণা করেছি। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে একমত এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা এক ছাতার নীচে নিয়ে এসেছি। কারণ আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে চাই সে কথা আমরা বলি নাই। আমরা বলেছি জনগণ যেনো তাদের অধিকার ফিরে পায়।
মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জহির উদ্দিন স্বপন। মিডিয়া সেলের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা, শাম্মী আখতার, কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।