শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২২ অপরাহ্ন

‘সদরঘাট থেকে সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ’

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ ক্রমশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় ঢাকার সদরঘাট থেকে সারাদেশে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআইডব্লিউটিএ।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার নদীবন্দর সমূহকে তিন নম্বর নৌ বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ কারণে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান ইসমাইল হোসেন। সদরঘাট থেকে সকালে চাঁদপুরের দিকে কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও উপকূলীয় জেলা ভোলার উদ্দেশে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নদী বন্দরে এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। ভোলার উদ্দেশে বন্দরে আসা যাত্রী রেশমা জামান বলেন, মেয়ে বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। এখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে নদী বন্দরে এসে দেখি সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আবার মেয়ের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আরেক যাত্রী আকবর আলী বলেন, জরুরি কাজের জন্য মেহেন্দিগঞ্জের ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশে নদী বন্দরে এসেছিলাম। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি কোনো লঞ্চ যাবে না। এখন বাধ্য হয়ে সড়ক পথে যেতে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র রেজাউল করিম বলেন, বাড়ি যাওয়ার জন্য সহজে ছুটি মিলে না। অনেক কষ্ট করে আজ ছুটি নিয়ে রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে সব লঞ্চ বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে ঢাকার উদ্দেশে সকালে চাঁদপুর থেকে এমভি আফিয়া, এমভি সোনার তরী-৩, এমভি ঈদগল-৭, এমভি বোগদাদিয়া লঞ্চ ছেড়েছে। এরপর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে সব ধরনের লঞ্চ বন্ধ হয়ে যায় বলে চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দায়িত্বরত নৌপথ পরিদর্শক (টিআই) শাহ আলম মুঠোফোনে জানান।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক মুঠোফোনে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগাম সতর্কতা হিসেবে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চসহ সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়টি উপকুলের আরও কাছে এগিয়ে আসায় সমুদ্র বন্দরগুলোকে বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। মিধিলির কারণে দুপুর থেকে বাতাসের গতি বাড়বে। আর সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করবে। বঙ্গোসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয়নি। শক্তিসঞ্চয় করে সেটি শুক্রবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড়‘মিধিলিতে’ রূপ নেয়। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় বরিশালে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজ সকাল থেকে কিছুটা ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com