বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৭:০০ অপরাহ্ন

দুই মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া প্রণয়নের আদেশ

শিল্প খাতে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর (বীর বিক্রম) সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এলপিজি ব্যবহারের জন্য খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের আলোকে চলতি মাসে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এ কমিটিকে আগামী দুই মাসের মধ্যে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করার সময় বেঁধে দেয়া হয়।

সভার কার্যপত্র থেকে জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর গঠিত এ কমিটির দায়িত্ব হবে শিল্প খাতে এলপিজি ব্যবহারের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিতকরণ; এলপিজি ব্যবহারের কারিগরি এবং বাণিজ্যিক দিকের সঙ্গে অন্যান্য জ্বালানির তুলনা করা। পাশাপাশি এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে প্রণোদনা চিহ্নিত করে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা। গঠিত কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক মো. শামীম খানকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), শিল্প মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা), টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) প্রতিনিধিরা। জ্বালানি বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এলপিজি ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আয়োজিত বৈঠকে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি আজম জে চৌধুরী এলপিজি খাতের সামগ্রিক অবস্থা তুলে ধরেন। এরপর হা-মীম গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরবচ্ছিন্নভাবে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা এখনো কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। তাই এলপিজি ব্যবহার করে চালানো যায়, এমন জেনারেটর ক্যাপ্টিভ পাওয়ার প্লান্ট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বলছে, দেশে বর্তমানে বার্ষিক প্রায় ১৪ লাখ টন এলপি গ্যাসের চাহিদা রয়েছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলে এ চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়বে। গৃহস্থালি জ্বালানির ব্যাপক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে জ্বালানি হিসেবে নিরবচ্ছিন্নভাবে এলপিজি সরবরাহ করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি ও বেসরকারি গ্যাসক্ষেত্র থেকে দিনদিন প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন কমছে এবং মজুদ ফুরিয়ে আসছে। তাই বিকল্প জ্বালানির উৎস বের করতে হবে। গৃহস্থালি ছাড়াও শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এলপিজির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com