সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ অপরাহ্ন

ইউরোজোনের অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস

মহামারীর পর প্রথমবারের মতো মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে ইউরোজোনের অর্থনীতি। এজন্য চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্লকটির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দেশে গৃহীত কঠোর মুদ্রানীতি ও শিল্পোৎপাদন কার্যক্রমে স্থবিরতাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। চলতি অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংকোচন ঘটতে যাচ্ছে ব্লকের অর্থনীতিতে।

ব্লুমবার্গ পরিচালিত এক জরিপে সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে জন্য ইউরোজোনের অর্থনীতি দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। যদিও উৎপাদন কার্যক্রম অপরিবর্তিত থাকার কথা বলা হয়েছে। আগামী বছরের প্রথমার্ধে অর্থনীতি কিছুটা গতি পেতে পারে। সেদিকে ইঙ্গিত করে জার্মানিভিত্তিক ব্যাটালিয়ন ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জর্জ অ্যাঞ্জেল বলেন, ‘‌অর্থনীতি পুনরুদ্ধার নিয়ে আমরা এখনো সন্দেহজনক পরিস্থিতির মধ্যেই রয়েছি। সুদহারের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি এখনো নাগালের বাইরে।’

ইউরোজোন নিয়ে ব্লুমবার্গের প্রকাশিত জরিপের ফল এর আগে নভেম্বরে প্রকাশিত ইউরোপীয় কমিশনের পূর্বাভাসের বিপরীত। প্রতিষ্ঠানটি সে সময় বছরের চতুর্থ প্রান্তিকেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এর কারণ হিসেবে তুলে আনা হয়েছিল মূল্যস্ফীতি নেমে আসা ও চাকরির বাজারে উল্লম্ফন। কিন্তু নতুন জরিপে সে সংকট আরো দীর্ঘ হওয়ার আভাস দেয়া হলো।

বৃহস্পতিবার ইউরোস্ট্যাট অঞ্চলের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণ হিসেবে মজুদ কমে আসাকে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ মানুষ এখনো ব্যয় অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু শিল্পপণ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় শঙ্কা আরো দীর্ঘ হয়েছে। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মুদ্রানীতির কারণে মূল্যস্ফীতির গতি কিছুটা কমে এসেছে। বিষয়টি বাজার ও নীতিনির্ধারকদের জন্য কিছুটা আশা জাগানোর কাজ করেছে। অনেকেই দাবি করেছিলেন, ঠিক এ কারণেই খুব শিগগির ইউরোপীয় অঞ্চলে মজুরি বাড়ানো হতে পারে।

মূল্যস্ফীতি নিয়েও অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাসে পরিবর্তন এনেছেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমে আসতে পারে মূল্যস্ফীতি। তার পরও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের নিচে নামবে বলে মনে করেন না। প্রত্যাশিত মাত্রায় নামিয়ে আনার জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে রাষ্ট্রগুলোকে। পিএমআই সূচকে ব্লকটির কারখানা কার্যক্রমের মন্থরতা উঠে আসছে। সুদহার বাড়ার জেরে দেখা দিয়েছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। ঋণব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তারা খরচের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে উঠছেন। আর ভোক্তাদের প্রতিক্রিয়া প্রভাবিত করেছে পরিষেবা খাতের পিএমআইকে।

ইউরোজোনের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কাটি এল জার্মানি ও ইতালির শিল্পোৎপাদন কার্যক্রমের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর। এর আগে ফ্রান্স ও স্পেনের অর্থনীতি সম্পর্কে প্রকাশিত তথ্যেও পরিস্থিতি প্রত্যাশার অনুপাতে ছিল না।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com