সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে তিন সংস্করণেই জয়ের চক্র পূরণ হলো বাংলাদেশের। গত বছরের শুরুতে সেখানে টেস্ট জেতার পর চলতি সফরে ওয়ানডের পর টি২০তেও শেষ হাসি হাসল তারা। দীর্ঘ অপেক্ষার পালা ঘুচিয়ে গর্বিত টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সঙ্গে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে তার নজর এখন দ্বিতীয় টি২০’র দিকে। নেপিয়ারে বুধবার নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
১৩৫ রানের ছোট লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় ৮ বল হাতে রেখে। এতে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। তাসমান সাগরের পাড়ে অবস্থিত দ্বীপদেশটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এর আগে নয়টি টি২০ খেলেছিল বাংলাদেশ। প্রতিবারই হেরেছিল তারা। এবার দশম লড়াইয়ে এসে শান্তর নেতৃত্বে ধরা দিল পরম আকাক্সিক্ষত জয়।
সাদা বলের দুই সংস্করণের সিরিজ শুরুর আগে জয়ের অপেক্ষা ঘোচানোর প্রত্যয় জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জেতার পর প্রথম টি২০তেই কিউইদের হারিয়ে কথা রেখেছেন শান্ত। ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যেভাবে আজ আমরা খেলেছি সেটা নিয়ে সত্যিই রোমাঞ্চিত ও গর্বিত। আসলেই রোমাঞ্চিত, আসলেই গর্বিত।’
নেপিয়ারেই হওয়া শেষ ওয়ানডেতে পেসারদের দাপটে নিউজিল্যান্ডকে ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। বুধবারও তারা পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন সবচেয়ে সফল। আরেক বাঁহাতি মুস্তাফিজুর রহমান ২ উইকেট শিকার করেন স্রেফ ১৫ রান খরচায়। তানজিম হাসান সাকিব যদিও খরচে বোলিং করেন। ১ উইকেট নিতে দেন ৪৫ রান। তবে তিনজনই পেয়েছেন শান্তর প্রশংসা, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার যে তারা দ্রুত শিখে ফেলছে, আমার এটাই মনে হয়েছে। নতুন বলে শরিফুল, সাকিব ও ফিজ (মুস্তাফিজ) খুবই দারুণ করেছে। শেখ মেহেদী চিত্তাকর্ষক ছিল, এই কন্ডিশনে সে খুবই ভালো বল করেছে।’
পেসারদের পাশাপাশি ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা শেখ মেহেদী ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফর্ম করেন। নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে ১৩৪ রানে আটকে ফেলতে অফ স্পিনে নজর কাড়েন তিনি। ১৪ রানে তার শিকার ২ উইকেট। এরপর জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ ৯৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে যখন চাপে, তখন লিটন দাসের সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে পৌঁছে দেন লক্ষ্যে। শেখ মেহেদী ১৬ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ওপেনার লিটন দাস খেলেন হার না মানা ৩৬ বলে ৪২ রানের ইনিংস।
সাদামাটা রান তাড়াতেও এক পর্যায়ে শঙ্কার কালো মেঘ জমা হয়েছিল বাংলাদেশের আকাশে। শেষ ৩ ওভারে দাঁড়িয়েছিল ২৪ রান করার সমীকরণ। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের দলনেতা বলেন, ‘এটাই ক্রিকেটের সৌন্দর্য, এটা সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে, এই ধরনের কন্ডিশনে এই ধরনের দলের বিপক্ষে। কিন্তু আমরা তাদেরকে (অল্প রানে) বেঁধে ফেলার পর থেকে জয়ের ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’
বাংলাদেশের সামনে এখন প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাঠে সিরিজ জয়ের হাতছানি। মাউন্ট মঙ্গানুইতে দ্বিতীয় টি২০ হবে আগামীকাল শুক্রবার। সেই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত, ‘ছেলেরা এখন খুবই আত্মবিশ্বাসী। আমাদেরকে এখন দ্বিতীয় টি২০ জন্য একটি পরিকল্পনা আঁটতে হবে। আশা করি, সবাই তাদের সেরাটা দেবে।’