শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তিনি বাসায় ফেরেন।

এদিকে দলীয় প্রধানের হাসপাতালে থেকে বাসায় যাওয়ার খবরে বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। বাসায় যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে থেকে তার মুক্তি চেয়ে নানা স্লোগান দেন।

সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হাসপাতাল থেকে রওনা দিয়ে রাত আটটার দিকে গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ সময় তার গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বর্তমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

গত শনিবার মধ্যরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ওই রাতে গুলশানের বাসভবনে গিয়ে স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে ওইদিন রাতেই তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর খালেদা জিয়াকে দিনগত রাত তিনটার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গত ২৭ মার্চও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়েছিল। এরপর চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তার স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন এবং তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন।

এর আগে চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখ খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরদিন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় ফেরেন।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে ৬ মার্চও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ (খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি) সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা নাকচ করে দেয় সরকার। বরং আগের মতো দুই শর্তে (বিদেশে যেতে পারবেন না ও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।  ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com