শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নগরকন্ঠ.কম : এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আপনার পাশে থাকা মানুষটির খোঁজ রেখে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে।
মহামারী ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে নিয়মিত আয়োজিত এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের বিষয়বস্তু ছিল ‘করোনাভাইরাস সংকটে মানবিক সহায়তা’। সেখানে অংশ নেয়া আলোচকবৃন্দ আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দূরদর্শী নেতৃত্বে’ ঠিকই করোনা ভাইরাস সঙ্কট ‘জয় করবে’ বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলি ফরহাদ।
এই মহামারীতে দেশে বিদেশে বাংলাদেশের যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার শান্তি ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বৈশ্বিক মহামারিতে শেখ হাসিনা সুদক্ষ নেতৃত্ব দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। করোনা সংকটে ৫ কোটির বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা এবং ৫০ লাখ পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঈদ উপহার দেওয়া হয়েছে। এই দুর্যোগে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। মনোবল শক্ত রেখে এই বৈশ্বিক সঙ্কট আমরা মোকাবেলা করবো ইনশাল্লাহ। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কর্মহীন মানুষদের খোঁজ খবর রাখতে বলেন তিনি।
আলোচকদের প্যানেলে থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপুমনি বলেন, ‘শুধু সরকার নয়, আমাদের জনগণকেও, যেমন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যক্তি বিশেষ… আমরা যেন সমাজের একজন আরেক জনের পাশে দাঁড়াই। সরকারের পাশাপাশি আমাদের যার যতটুকু আছে, আমরা আমাদের পাশের মানুষটির পাশে দাঁড়াব।’
এ সময় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ছয় মাসের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৪ মে পর্যন্ত শিশু খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়ের জন্য প্রায় ৯২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এবং ৮১৭ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। ৫০ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সরাসরি আড়াই কোটি মানুষ এই সহযোগিতার আওতায় এসেছেন। এক লাখ এক হাজার একশ সতের কোটি টাকার মোট ১৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন। ১৮ তম যে প্রণোদনার প্যাকেজটি সেখানে তিনি দুই হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল দিয়েছেন প্রবাসী ও তরুণদের জন্য। মোট ১১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের এই প্রণোদনা প্যাকেজ। অর্থাৎ আমাদের জিডিপির মোট তিন দশমিক ছয় শতাংশ।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমরা যখন বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ করছি তখন আম্ফান নামে আরো একটি দুর্যোগ আমাদের সামনে। দেশের ১৯টি কোস্টাল এরিয়ার মানুষ এখন উদ্বিগ্ন। আর এই দুর্যোগের প্রস্তুতিও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিয়েছে।
আলোচনায় ছিলেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা সম্মুখ সমরে কাজ করছেন। বাংলাদেশের মূল ধারার গণমাধ্যম সরকারের বর্তমান অবস্থানকে সমর্থন করে। এই মহা দুর্যোগ গণমাধ্যমের দিক থেকে কয়েকটি ইতিবাচক দিক দেখছি। একটি হচ্ছে রাজনীতির মানবিক চেহারা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ব্যবস্থাপনা। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিকভাবে দুর্যোগটি প্যানডেমিক ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি আরেকটি যুক্ত হয়েছে সেটি হচ্ছে ইনফোডেমিক। অসংখ্য ভুল তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এই ভুল তথ্যগুলোর কথা মানুষকে জানিয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহের কথাও জানান তিনি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সদস্য শিপ্রা দাস বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রথম দিকে আমার হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করি। পরে মাস্কসহ পিপিই বিতরণ করি। পরে আমরা খাবার প্রজেক্ট শুরু করি। প্রথমে শুকনো খাবার বিতরণ করি। প্রায় দুই লাখ পরিবারে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। প্রায় চার জায়গায় রান্না করার খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় তিন লাখ মানুষের কাছে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছি।
রাত ১০টা থেকে দুই ঘণ্টার এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
নগরকন্ঠ.কম/এআর