শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন

স্ত্রীকে লুকিয়ে রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, নগরকন্ঠ.কম : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সম্পদের লোভে স্ত্রীকে লুকিয়ে রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা গুমের মামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উদ্ধার হওয়ার পর বুধবার স্ত্রী হামিদা বেগম বাদী হয়ে স্বামী আওয়াল মিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসমা বেগম বিষয়টি তদন্তের জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাধবপুর থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

জানাযায়, উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নাফের ছেলে আব্দুল আউয়াল মিয়া প্রায় ছয় বছর আগে ফরহাদপুর গ্রামের মোছা. হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে ভয়ভীতি ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আউয়াল মিয়া তার স্ত্রী হামিদা বেগমের প্রায় ৩০ লাখ টাকার সম্পদ বিক্রি করে দেন। সর্বশেষ গত বছর হামিদা বেগম তার পাঁচ শতাংশ জমি ছোট ভাইয়ের ছেলে ও স্বামীর নামে দলিল করে দেন। এসময় তিনি মৌখিক শর্ত রাখে তার মৃত্যু পর্যন্ত তাকে দেখাশোনা করতে হবে। কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে ছোট ভাইয়ের ছেলের নামের আড়াই শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন। এনিয়ে ভাই ইদ্রিস আলীর সাথে বোন হামিদা বেগমের মনমালিন্য হয় এবং সালিস বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলে। এক পর্যায়ে আব্দুল আউয়াল তার স্ত্রীকে কৌশলে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলা নিয়ে এক বাড়িতে রেখে এসে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে গুমের মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামি মো. ইদ্রিস আলী (৪০) জানান, এই মামলার কারণে আমি সপরিবারে ১১ মাস যাবত পলাতক ছিলাম। জমিজমা বিক্রি করে প্রায় ২৩/২৪ লাখ টাকা নষ্ট করে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই মিথ্যা মামলার ১০ নম্বর আসামি চিন্তায় চিন্তায় স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমার বোন উদ্ধার হওয়ায় এখন সব আসামিরা বাড়ি ফিরে আসছে।

হামিদা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আওয়াল মিয়া আমার প্রায় ৩০ লাখ টাকার জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে গেছে। এখন ভাইয়ের সাথে আমার বিরোধের সুযোগ নিয়ে আমাকে বড়লেখায় রেখে এসে আমার ভাইসহ আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। একপর্যায়ে আমি বাড়িতে চলে আসতে চাইলে আমার স্বামী আওয়াল মিয়া আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সিলেটে নিয়ে যায়। বিষয়টি আমি বুঝতে পেরে স্থানীয় একজনের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ করি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের কয়েকজন মুরুব্বি নিয়ে আমাকে উদ্ধার করে আনেন।

এব্যাপারে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, এরকম একটি মামলা হয়েছিল বছরখানেক আগে, যা তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ প্রদান করছেন আদালত। পাল্টা মামলা বা আদালতের কোন নির্দেশ এখনো হাতে পাইনি। আদালতের নির্দেশ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

নগরকন্ঠ.কম/এআর

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com