শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন

কাঁচামরিচ ঝাঁজে-ঝালে দারুণ মজা

লাইফস্টাইল ডেস্ক, নগরকন্ঠ.কম : প্রাচীনকাল থেকেই মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মরিচের চাষ করা হতো। পুরাতাত্ত্বিকরা প্রমাণ পেয়েছেন, কুয়েডরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে ছয় হাজার বছর আগে মরিচের চাষ করা হতো।

এটি নিয়ে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার প্রমাণিত হলে, মরিচের পরিধি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ফিলিপাইনে এরপর থেকে ভারতবর্ষ, চীন, কোরিয়া ও জাপানে মরিচ বিস্তার লাভ করে। এক পর্যায়ে আমরাও তা পেয়েছি।

গ্রাম-বাংলার অতি পরিচিত একটি মসলার নাম কাঁচামরিচ। আর যে কোনো তরকারি রান্নায় কাঁচামরিচ অন্যতম। একটা সময় সহজলভ্য ও দামেও সস্তা ছিল। কালচক্রে মসলানামের কাঁচামরিচের দাম অনেকটা চড়া। তবে ভেষজগুণে ভরপুর। বাঙালিদের কখনও কখনও খাবার তালিকায় থাকে গরম কিংবা পান্তাভাতে ভাজা মাছ সঙ্গে দু-একটি কাঁচামরিচ; এর ঝাঁজ ও ঝাল খাবারের তৃপ্তি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। তখন খাবারের স্বাদটিও অন্যরকম লাগে। আর রান্না, মরিচমাখা আলুভর্তা, মুড়িমাখা, সালাদ, স্যুপ ও নুডলসসহ কাঁচামরিচ খাওয়া হয় খুব-ই মজা করে। এসব খাবারের স্বাদ নুন ও মরিচে। মরিচ ছাড়া কি চলে!

বাঙালিদের একটু-আধটু ডাল ছাড়া পেট ভরে না। ডাল রান্নায় কাঁচামরিচ না হলে স্বাদ থাকে না। আবার কাঁচামরিচ যখন জিহ্বায় থাকে তখন লালাও নির্গত হয়। নির্গত লালা তখন আমাদের হজমে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। অনেক সময় শুকনো ঝাল মরিচ খেলে পেট জ্বালা-যন্ত্রণা করে। আবার অনেকেরই গ্যাস্ট্রিক ও মলমূত্রের জ্বালাও বেড়ে যায়। তবে ভাতের সঙ্গে কাঁচামরিচ চিবিয়ে খাওয়া পাশাপাশি রান্না করেও খাওয়া অনেক ভালো। এতে আছে ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তা ছাড়াও হজম বৃদ্ধি, ক্ষুধা, দাঁত, মাড়ি ও মল রোধেও দারুণ উপসম করে বিধায় কাঁচামরিচের কোনো জুড়ি নেই।

আসলে এটি মরিচ বা লঙ্কা এক ধরনের ফল। এটিকে আমরা সবজি হিসেবেই তুলনা করে থাকি। এটি Capsicum গণের Solaneceae পরিবারের উদ্ভিদের ফলকে মরিচ বলে ডাকি বা চিনি। মরিচ মূলত মসলা হিসেবেই ব্যবহার হয়ে থাকে। মরিচ নানা প্রজাতির হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে Capsicum chinense প্রজাতির Naga jolakia, যা বাড়ির আঙিনায় বা ছাদে শখ করে বোট মরিচ রোপণ করি আর Capsicum annuum প্রজাতির Cayenne মরিচ আমাদের দেশে ভালো জন্মালেও সিলেটের অঞ্চলে নাগা মরিচ, যা বোম্বাই মরিচ নামেও খুব-ই পরিচিত। আর সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর সর্বত্র-ই মরিচ রান্নার কাজে ও ভেষজ ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কাঁচামরিচ যত-ই স্বাদ হোক না কেন, এটি পরিমিত খাওয়া ভালো। তবে অতিরিক্ত খাওয়া কোনোক্রমেই ভালো না। এটি একদিকে আয়, আরেক দিকে ঘরের চাহিদা মেটাতে তার কোনো জুড়ি নেই।

নগরকন্ঠ.কম/এআর

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com