রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২১, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
করোনার মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মশাবাহিত জীবাণুর সংক্রমণজনিত রোগটির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি রাজধানী ঢাকায়। রাজধানীতে রোগটির চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে রোগীরা এখন সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি চিকিৎসা সেবাতেই আস্থা রাখছেন বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নেয়া রোগীদের প্রায় ৬২ শতাংশই ভর্তি হয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালগুলোয়। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারীর প্রাদুর্ভাব ও সরকারি চিকিৎসা সেবার প্রতি আস্থাহীনতার কারণেই রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন বেশি।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ে সেরে ওঠা রোগীদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালগুলোয় প্রত্যাশিত সেবা মিলছে না। পরিবেশও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাছাড়া বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালের পক্ষেও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অন্য রোগে আক্রান্তদের প্রত্যাশিত সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য রয়েছে, তাদের গন্তব্য হয়ে উঠছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। আর যাদের আর্থিক সক্ষমতা কম, তারা অনেকটা নিরুপায় হয়েই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি স্বাস্থ্য অপারেশন কেন্দ্র ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১০৫ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৩ জন, যার মধ্যে ৬০০ জনই সেবা নিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালে। সে হিসেবে ঢাকায় চিকিৎসা নেয়া ডেঙ্গু রোগীদের প্রায় ৬২ শতাংশ ভর্তি হয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালে। এর মধ্যে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮ জন, এর মধ্যে ১১ জনই ঢাকার বাসিন্দা। তাদের সবাই এখন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা নেয়া ৬০০ জনের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ৯৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন ধানমন্ডি সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে। ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬২ জন। ৫৬ জন চিকিৎসা নিয়েছেন স্কয়ার হাসপাতাল থেকে। এছাড়া ৪৩ জন করে মোট ১২৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে। এছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৩৩ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২৮, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৭, আজগর আলী হাসপাতালে ২৩, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডে ২২ ও উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়াও আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম, মিরপুর ডেল্টা মেডিকেল কলেজ, ল্যাব এইড হাসপাতাল, গ্রীন লাইফ মেডিকেল হাসপাতাল, খিদমাহ হাসপাতাল, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআরবি হসপিটালস লিমিটেড, সালাউদ্দিন হাসপাতাল ও উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল থেকেও চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা।