শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
মেহের আফরোজ শাওন। নন্দিত অভিনেত্রী, কণ্ঠশিল্পী ও নির্মাতা। সম্প্রতি বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান পেয়েছিলেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা। কিন্তু হুমায়ূন পরিবারের দেওয়া কয়েকটি শর্তের কারণে নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তিনি। এ নিয়ে কথা হয় শাওনের সঙ্গে-
অমিতাভ রেজা যখন অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য জমা দেন, তখন অনুমতি নেননি?
লিখিত অনুমতি নিয়েছেন। লিখিত অনুমতি আর লিগ্যাল অনুমতি এক জিনিস নয়। তিনি যে লিখিত অনুমতি নিয়েছেন, সেটা তো আমরা এখনও দিতে রাজি। লিখিত অনুমতিতে কপিরাইট ভ্যালুর বিষয়টি ছিল না। প্রাথমিক অনুমতি নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা যায় না। নির্মাণের আগে দু’পক্ষের পাকা কন্ট্রাক্ট হবে। সেখানে কপিরাইট ভ্যালুর সবকিছু উল্লেখ থাকবে। লেখক, কবি বা চিত্রশিল্পী, যিনিই হোন না কেন; তার শিল্পকর্মের একটি মূল্য থাকে। সে মূল্য হয় শিল্পী নিজে তৈরি করেন, আর তিনি না থাকলে তার উত্তরাধিকারীরা ঠিক করেন। সে ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সবাই মিলে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ছবির বাজেট নিয়েও তো কথা হয়েছে…
অমিতাভ রেজা ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’র মতো একটি গল্প যে বাজেটে নির্মাণ করতে চেয়েছেন, সেটি আমাদের মনঃপূত হয়নি। তিনি গুণী একজন নির্মাতা। তার ‘আয়নাবাজি’ ও ‘রিকশা গার্ল’ সিনেমার বাজেট অনেক বড় ছিল। হুমায়ূন আহমেদের গল্পটা তো আরও এক্সকু্লসিভ। আবার সেটা যখন অমিতাভ রেজা বানাবেন, তখন দুটি বিখ্যাত নাম একসঙ্গে আসবে; সবার প্রত্যাশা অনেক বেড়ে যাবে। তা ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের পরিবার হিসেবে আমাদেরও একটা প্রত্যাশা আছে। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের এত ভালো একটা গল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি যে বাজেট ধরছেন, সেটা আমাদের কাছে সম্মানজনক ও গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। তার আগের ছবির চেয়ে নতুন সিনেমার বাজেট কম হবে- এটা আমরা ভাবিনি। আর আমাদের কাছে যা মানানসই মনে হয়েছে, সেটা নাকি তার বাজেটের বাইরে। যে জন্য তিনি ছবি নির্মাণ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে- এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
এখানে আসলে শর্তের কিছু নেই; নিয়মের কথাই বলেছি। আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশের মেধাস্বত্বের যে নিয়ম, আমরা সেটাই তার কাছে তুলে ধরেছি। হুমায়ূন আহমেদের মতো একজন খ্যাতিমান লেখকের গল্প আমি নেব, তার মূল্যমান অবশ্যই দিতে হবে। এ জন্য আমরা বলেছি, দেশে নয়- বিদেশের কোনো বড় প্ল্যাটফর্মে সিনেমাটি প্রদর্শিত হলে সেখান থেকে আমাদের রয়্যালিটি দিতে হবে। হুমায়ূন আহমেদের গল্পের নিজস্বতা বজায় রাখতে যে ধরনের মূল্যমান নির্ধারণ করতে হয়, আমরা সেটা করেছি।
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর তার সাহিত্য ও সৃজনশীল সব বিষয় দেখভাল করার জন্য ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে বলে শুনছি। আসলে ট্রাস্টি বোর্ড কি আছে?
আইনগতভাবে হুমায়ূন আহমেদ ট্রাস্টি বোর্ড বলতে যা বোঝায়, তা এখনও গঠিত হয়নি। আমরা উত্তরাধিকারীরা আলোচনা করে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিই। সেখানে হুমায়ূন পরিবারের অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত থাকেন। কাগজ-কলমে আইনগত ভিত্তির ওপর একটি ট্রাস্ট গঠন করার প্রক্রিয়া চলছে।