সোমবার, ১৬ মে ২০২২, ০৯:২১ অপরাহ্ন
মিরপুরের উইকেটে রান! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরম আরাধ্য। কাল দীর্ঘদিন পর সেই চাওয়া পূর্ণ হলো মিনিস্টার ঢাকা-খুলনা টাইগার্স ম্যাচে। এজন্য অবশ্য রাতের শিশিরকেও ধন্যবাদ দিতে হয়। বোলারদের বল গ্রিপ করা কঠিন হওয়ার সুযোগে চার-ছক্কায় দারুণ ম্যাচ উপহার দিলেন দুই দলের ব্যাটাররা। শেষবার এই মাঠে রানবন্যা ছুটেছিল ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে হওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলে। এরপর কাল ঢাকার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে টি-টোয়েন্টির আসল আমেজ মিলল। আগে ব্যাট করে ঢাকা তামিম, শাহজাদ ও মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তুলল ৬ উইকেটে ১৮৩ রান। জবাবে খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে ১৮৬ রান তুলে প্রথম জয় নিশ্চিত করে।
অষ্টম আসরের প্রথম দিন দুই ম্যাচ হলো দুই রকম। দিনের শুরুর ম্যাচে রানই উঠল না। আর দ্বিতীয় ম্যাচে বোলাররা তেমন পাত্তাই পেলেন না। চার-ছক্কার টি-টোয়েন্টি পুরোপুরি ফিরিয়েছেন ঢাকার ও খুলনার ব্যাটাররা। দুর্ভাগ্য আন্দ্রে রাসেলের। সম্ভবত ক্রিকেট ইতিহাসের অদ্ভুত রান আউটে ফিরতে হয়েছে তাকে। বল পয়েন্টে ঠেলে চলে যাচ্ছিলেন নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে। ফিল্ডার বল মারেন স্ট্রাইক স্টাম্পে। ততক্ষণে মাহমুদউল্লাহ পপিং ক্রিজের ভেতরে। কিন্তু বল স্টাম্পে লেগে গড়িয়ে সোজা নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্পে আঘাত করে। তখনও পপিং ক্রিজে পা/ব্যাট রাখেননি রাসেল। আইনগতভাবে আউট! মাত্র ১ ছক্কায় ৭ করে তাই বিস্ময়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন রাসেল। অবশ্য রাসেল-শো মিসের আক্ষেপে ঢাকাবাসীকে পড়তে দেননি বাকিরা। শুরু থেকেই আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদের ঝড়ো শুরু ঢাকার রান বাড়িয়ে দেয় দ্রুত। মাত্র ২৭ বলে ৮ চারে ৪২ করে রান আউট হন। শাহজাদের বিদায়ের পর রানের গতি ছোটান তামিম। শাহজাদ ফেরার সময় তার ছিল ২১ বলে ১৯ রান। পরের ৫ ওভারে এবারের বিপিএলে প্রথম ফিফটি তুলে নেন তামিম। ৪২ বলে ৫০ করে আউট হয়েছেন ডিপ-মিড উইকেট দিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে। ইনিংসের বাকি অংশে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহই দলকে টানেন। শেষ ৫ ওভারে ঢাকার আসে ৬৭ রান। মুখোমুখি হওয়া শেষ চার বলে ১৭ রান নেন তিনি। পরে রাব্বিকেই মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হন ২০ বলে ৩৯ করে।
খুলনা শুরুতে এক উইকেট হারালেও রানের গতি ছুটিয়েছে ঢাকার চেয়েও দ্রুত। ঢাকার ইনিংসের দারুণ জবাব দেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও রনি তালুকদার জুটি। তৃতীয় ওভারে আসে ইনিংসের সর্বোচ্চ ২২ রান। ৫ ওভারে ৫৫ ও ১০ ওভারে ১০১ রান তুলে সেখানেই এগিয়ে যায় খুলনা। ৪৫ রান করা ফ্লেচারকে নিয়ে ৭২ রানের জুটি গড়েন ৪২ বলে ৬১ রান করা রনি। তার ব্যাটেই জয়ের পথটা তৈরি হয়ে যায় মুশফিকদের। শেষদিকে টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞ তারকা থিসারা পেরেরা ১৮ বলে ৬ চারে অপরাজিত ৩৬ করে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা : ১৮৩/৬ (২০ ওভার) (শাহজাদ ৪২, তামিম ৫০, নাঈম ৯, মাহমুদউল্লাহ ৩৯, রাসেল ৭, জহুরুল ১২, শুভাগত ৯*, উদানা ৬*; রাব্বি ৩/৪৫, থিসারা ১/২৭, মাহেদী ০/২৪)। খুলনা : ১৮৬/৫ (১৯ ওভার) (ফ্লেচার ৪৫, তানজিদ ২, রনি ৬১, মুশফিক ৬, ইয়াসির ১৩, থিসারা ৩৬*, মাহেদী ১২*; শুভাগত ১/৯, রাসেল ২/৪২, এবাদত ২/২৭)। ফল : খুলনা ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : রনি তালুকদার।