শিগগিরই আবার চাঁদের মাটিতে পা রাখতে চলেছে মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ইতিমধ্যে চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোর অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। এ জন্য পৃথিবীতেই চাঁদের পৃষ্ঠের মতো পরিবেশ পেতে বেছে নেওয়া হয়েছে স্পেনের একটি দ্বীপকে। ইউরোপীয় দেশটির লান্সারোটে দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের যৌথ চন্দ্রাভিযানের প্রশিক্ষণ চলছে। এই দ্বীপের সঙ্গে চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহের উপরিভাগের অনেক মিল রয়েছে। দ্বীপটি বেছে নিতে ভবিষ্যতে মঙ্গলযাত্রার কথাও মাথায় রাখা হয়েছে।
এ মহড়ায় মহাকাশচারীদের সবসময় পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে বেতার যোগাযোগ চালু রাখতে হবে। বিজ্ঞানীরা তাদের আরও দক্ষতার সঙ্গে নির্দিষ্ট পাথর খুঁজতে সাহায্য করবেন। ৫০ বছর আগে অ্যাপোলো মিশনের সময় এ রকম মহড়া সম্ভব ছিল না। চাঁদে পৌঁছানোর পর তাদের যা সন্ধান করতে হবে, লান্সারোটের মাটিতেই বারবার তা অনুশীলন করা হচ্ছে।
মহড়ায় অংশ নিচ্ছেন জার্মানির মহাকাশচারী আলেক্সান্ডার গেয়ার্স্ট। এ মহড়ার গুরুত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বুকে সর্বত্র স্যাটেলাইট রিসিভার রয়েছে। আমরা সব জায়গায় যোগাযোগের সুবিধায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। চাঁদের বুকে সর্বত্র সেই সুযোগ নেই। আমাদের নিজস্ব নেভিগেশন ও যোগাযোগ প্রণালি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। সেগুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রশিক্ষণের সময়ে গোটা প্রণালি পরীক্ষা করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।’ গেয়ার্স্ট সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর মহাকাশে কাটিয়েছেন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন আইএসএসের কমান্ডার হিসেবে শেষবার তিনি মহাকাশে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একশরও বেশি পরীক্ষা চালিয়েছেন। এবার আরও বড় দায়িত্ব পেতে পারেন তিনি। চাঁদের বুকে স্টেশন গড়ে তোলার দায়িত্ব পেতে পারেন গেয়ার্স্ট। তিনি মনে করেন, ‘অ্যান্টার্কটিকার মতো চাঁদের বুকেও গবেষণা স্টেশন গড়ে তোলা একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ আমরা বেশি কিছু সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারব না। আমাদের টেকসই পদ্ধতিতে জীবনযাপন করা শিখতে হবে। চাঁদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। হয়তো পানির মধ্যে বিভাজন ঘটিয়ে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য বাতাস ও জ¦ালানি তৈরি করতে হবে। অনেক কাজ আছে, আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’