বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দর এলাকায় বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে রবিবার দিনভর দুই গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চাকরির জন্য শাকতোলা গ্রামের আলমগীর হোসেন আলোকদিয়ার গ্রামের নজরুল ইসলামকে ৭ লাখ টাকা দেয়। ২ বছর আগে আকষ্মিক ভাবে নজরুলের মৃত্যুর কারণে তার ভাতিজা নয়ন হোসেন জিম্মাদার হয়ে এ টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দীর্ঘ দুই বছরেও এ টাকা আর সে ফেরত দেয়নি। ফলে পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে এ দিন বেলা ১১টার দিকে ক্ষুব্ধ হয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর এলাকার নয়নের কম্পিউটারের দোকানে আলমগীর ও তার লোকজন তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুরে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উভয়পক্ষই হাসুয়া, রামদা, লাঠি, ফালা, হলেঙ্গা ও দেশীয় অন্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায়।
এ সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বৃষ্টির মত ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এক পর্যায়ে শাকতোলা গ্রামের লোকজন ওয়ান ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের ছাদে উঠে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাদের লক্ষ করে আলোকদিয়ার গ্রামের লোকজন মহাসড়কে দাড়িয়ে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় ইটের আঘাতে ওয়ান ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের সাইনবোর্ড ও গ্লাস ভেঙ্গে যায়।
এছাড়া বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সংঘর্ষ চলাকালে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পুরো এলাকার সকল দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে আবারও উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আধাঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উভয়পক্ষকে সড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে এ সংঘর্ষ চলাকালে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয়। এ ঘটনার পর থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ডিউটি অফিসার এসআই আসাদ বলেন, এখন পরিস্থতি শান্ত আছে। এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় মামলা করতে আসেনি। এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন, শফিকুল ইসলাম(৪৫), মজনু মিয়া (৩৫), তুষার (৩০), আয়নাল হক (৬৫), আব্দুল আলীম (৪০), স্বপন(৪৫), সবুজ (৩০), আমিরুল (২২), জলিল খা (৬০), আইয়ুব আলী (৬৫), ইমরান (২০), রাকিব (২৫), মজনু (২৪), মিলন (২৫), হাফেজ (৫০), সনেট (৩৫), জুঁই (২৬)।
এ বিষয়ে আলোকদিয়ার গ্রামের আহত তুষার বলেন, এদিন সকালের দিকে কথানাই বার্তা নাই হঠাৎ করে আলমগীর নয়নকে দোকান থেকে রেব করে দিয়ে তার দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। এ খবর গ্রামে পৌছালে গ্রামবাসি সেখানে এগিয়ে গেলে তারা হামলা চালায়। ফলে উভয়পক্ষের সাথে এ হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে আলমগীর হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।