বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ অপরাহ্ন

দাম নিয়ে কারসাজি করলে, কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

এ বছর ঢাকায় কোরবানির লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা গত বছর ছিলো ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। গত বছর এ দাম ছিলো ৪০ থেকে ৪৪ টাকা।

অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে গরুর চামড়ার দাম এ বছর ৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এ দরেই গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কিনতে হবে। তবে ছাগল ও বকরির চামড়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এবারও সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যাবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চামড়ার এই দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

এ সময় তিনি বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে এবার কাঁচা চামড়ার দর কমানোর চেষ্টা করলে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।

চামড়ার দাম কমাতে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই সমস্যা তৈরী করে বাজারে অস্থিরতা সৃস্টি করে সেক্ষেত্রে তাদের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ট্যানারি ব্যবসায়ীরা যদি ইচ্ছা করে দাম কমানোর জন্য কারসাজি করে তাহলে আমরা কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানির অনুমতি দেবো। আমরা আশা করি এমনটি হবে না।

উল্লেখ্য, এর আগে দেখা গেছে কাঁচা চামড়া রপ্তানি অনুমতি দেওয়া হলে দাম নিয়ে কারসাজির মত ঘটনা হয়নি।

টিপু মুনশি বলেন, চামড়ার দাম নিয়ে কোন কারসাজি হচ্ছে কিনা-সেটা তদারকির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়,বিভাগ বা দপ্তর হতে সম্মিলিতভাবে মনিটরিং করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি করা আছে। সেই মনিটরিং টিম এটি দেখভাল করবে যাতে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

চামড়াকে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই চামড়া যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়ে সবাইকে বিশেষ করে চামড়া শিল্পের সাথে সংযুক্ত সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, পশু কোরবানির ৭ থেকে ৮ ঘন্টার মধ্যে চামড়ায় লবন না লাগালে চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। তাই সতর্কতার সঙ্গে সঠিক পদ্ধতিতে লবনযুক্ত করে চামড়া সংগ্রহ করতে হবে। এলক্ষ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

টিপু মুনশি জানান, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ঈদের পরবর্তী সাতদিন ঢাকায় বাইরের চামড়া যাতে না আসে সেজন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সারাদেশের লবণয্ক্তু চামড়া পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আনা হবে। দেশে এবছর রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে। লবণের কোনো ঘাটতি নেই। তাই লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এবছর অনেক গরম। তাই বাজারে লবণের সরবরাহ নিশ্চিত করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। লবণের সংকট ও দামও যেনো না বাড়ে তা মনিটরিং করতেও শিল্প মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং ট্যানারি মালিক ও চামড়া শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com