রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন

নান্দাইলে চার শতাধিক গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামোগত তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের বসবাস গ্রামাঞ্চলে। আর এসব ইউনিয়নের অন্তত ৪ শতাধিক গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা। বর্ষার শুরুতেই রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের চৈতনখালী হতে খারুয়া পর্যন্ত রাস্তা, পলাশিয়া হতে শিবপুর বাজার পর্যন্ত, আত্মারামপুর রউফ মেম্বারের বাড়ি হতে হাসিম মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ছাড়াও এই ইউনিয়নের আরও অন্তত ত্রিশটি গ্রামীণ রাস্তার বেহাল অবস্থা।

২নং মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কালিয়াপাড়া বাজার থেকে কামালপুর ভায়া কৃষ্ণচন্দ্রপুর শিকদার বাড়ি পর্যন্ত, সেখান থেকে কুতুবপুর হয়ে সুরেশ ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত বিপরীত দিকে কাদিরপুর বাগে জান্নাত মাদ্রাসা পর্যন্ত রাস্তা। চামটা বাজার থেকে শিমুলাটিয়া ও রামজীবনপুর রাস্তা, বাহাদুরপুর, আমোদপুরসহ এই ইউনিয়নে অন্তত পঁচিশটি গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা।

৩নং সদর নান্দাইল ইউনিয়নের দাতারাটিয়া ব্রিজ থেকে পুতলাকান্দা পর্যন্ত, পালপাড়া হয়ে চনকান্দা, বৃহৎ রসুপুর গ্রামের তিনটি ওয়ার্ডসহ এই ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের ৩৫টির মতো গ্রামীণ সড়কের দীর্ঘদিনেও কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া।

৪নং চণ্ডীপাশা ইউনিয়নটি নান্দাইল পৌরসভা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন, এই ইউনিয়নের ধূরুয়া, বাঁশহাটি, মিশ্রীপুর, চামারুল্লাহ, বানাইল, ফুলবাড়িয়া, ডাংরী, বীরঘোষপালা, বারুইগ্রামসহ ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামের অন্তত ৪০ গ্রামীণ সড়কের করুণ অবস্থা। এসব সড়কের ছবি ভিডিও পোস্ট করে সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

৫নং গাংগাইল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইসলাম জানান, আমাদের ইউনিয়নের কমপক্ষে ৫০টির অধিক গ্রামীণ সড়ক কাঁচা। প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে এই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ৬নং রাজগাতি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০টির অধিক গ্রামীণ সড়ক কাঁচা। কালিগঞ্জ থেকে পূর্বদরিল্যার রাস্তাটি সাধারণ মানুষে অসহনীয় দুর্ভোগের কথা না বললেই নয়।

এবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে শহরের মানুষ গ্রামে এসেছে এরপর থেকেই টানা বৃষ্টি, পাশাপাশি একাধিক বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে সব মিলিয়ে সড়কগুলোর বাজে অবস্থা। পায়ে হেঁটেও চলাচল করা কষ্ট সাধ্য।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, আমাদের এমপি মহোদয় পবিত্র সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, নান্দাইলে উন্নয়নের বাকি নেই। অথচ ১৩ ইউনিয়নে শত শত কাঁচা রাস্তা রয়েছে যা বর্ষা মৌসুমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংসদে দাঁড়িয়ে উনি যে পরিমাণ কথা বলেছেন, তার তুলনায় এলাকায় তেমন কোনো কাজই হয়নি। নান্দাইলের গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মোতাবেক গ্রাম হবে শহর এই প্রক্রিয়া থেকে নান্দাইল অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যদি নান্দাইলের জন্য বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হতো তাহলেও গ্রামীণ অবকাঠামোর এমন বেহাল দশা হতো না। এসব গ্রামীণ রাস্তা অতি তাড়াতাড়ি উন্নয়ন করলেই সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে সুধীজনের অভিমত।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com