শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন
সারি সারি লাশ পড়ে আছে হাসপাতালে, পথে-ঘাটে। দাফন করার মত মানুষ নেই। যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসছেন তাদেরকেও হত্যা করা হচ্ছে। কখনো সামনে থেকে গুলি অথবা বিমান থেকে বোমা বর্ষন করে। এভাবে কেটেছে এক মাসের বেশি সময়। সারাবিশ্বের শান্তিকামী মানুষের দাবি উপেক্ষা করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। থামার কোনো লক্ষণ নেই। ইতোমধ্যে রক্তে বন্যা বয়ে গেছে গাজায়। নিহত হয়েছে ১৩ হাজারের বেশি মানুষ।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার। এছাড়া সাড়ে তিন হাজার নারীও রয়েছেন। খবর আনাদুলু এজেন্সির।
তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার। আহতদের ৭৫ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া নিখোঁজের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগই ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আনাদুলু এজেন্সির খবরে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে ৮৩টি মসজিদ। তিনটি গির্জাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ৪৩ হাজারের বেশি আবাসন ইউনিট সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজা উপত্যকার ৬০ শতাংশ আবাসিক ইউনিট।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে ২৫টি হাসপাতাল এবং ৫২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিষেবার বাইরে চলে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী ৫৫টি অ্যাম্বুলেন্সকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। গাজা প্রশাসন সেখানে চলমান নৃশংসতার জন্য ইসরায়েল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ী করেছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা গাজা সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামলার ব্যাপকতায় হতভম্ব ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় নিয়ে সেইদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। তারপর থেকে দখলদার ইসরায়েয়ের জঙ্গি বিমানগুলো গাজা ভূখণ্ডে লাগাতার বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এর পাশাপাশি স্থল অভিযানও শুরু করেছে। তাদের বর্বরোচিত হামলায় প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন বহু ফিলিস্তিনের নাগরিক।
গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এই হামলায় লক্ষ্যবস্তু হয়েছে শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলও।
এছাড়া অবরুদ্ধ গাজার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় আবু হাবাল নামে এক ব্যক্তির পরিবারের ৩২ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ শিশুও ছিল।