বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে আছে বলে মনে করছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। যুক্তি হিসেবে বলছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ রাস্তায় নামছে না, মিছিল, মিটিং করছে না। কিছু পণ্যে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় প্রিমিয়াম পজিশনে থাকার দাবিও করেছেন তিনি, যদিও এই প্রিমিয়াম পজিশনে থাকার ব্যাখ্যা দেননি।
গতকাল সোমবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুও উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজের। আব্দুস শহীদ বলেন, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সহনশীল অবস্থায় আছে। এতে কোনো সন্দেহ নাই। না হলে কিন্তু কিছুদিন পরপর মিছিল মিটিং হইত। আর আমরা তো মিছিল করে করেই এত বড় হইছি। এগুলো নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতার অভাব নাই। চাউল, চিনি, রসুন, আদা, পেঁয়াজ প্রতিটি পণ্যের তুলনামূলক চিত্র আমরা দেখেছি। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তুলনায় আমরা সবকিছুতে একটা প্রিমিয়াম পজিশনে আছি।
দেশের নাগরিক বা জনগণের অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নাই মন্তব্য করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সজাগ আছেন। কালকেও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। বাজার ব্যবস্থা সুন্দর করার জন্য অতীতেও আমরা একমত ছিলাম, ভবিষ্যতেও একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি।
বৈঠকের আলোচ্য সূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, সারা দেশের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য ইতোপূর্বে আমরা তিন মন্ত্রণালয় বসেছিলাম। মিটিং করে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে তিন মন্ত্রী ও সচিব মহোদয় মিলে আমরা বসেছি। বাজার পরিস্থিতি কেমন আছে, সামনে বাজেট আছে, ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কেমন হবে, এগুলো আলোচনা করেছি।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের করে দেওয়া যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি দরে পণ্য বিক্রির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় একটা দাম বেধে দেয়। বাজারে সাপ্লাই চেইন যেভাবে কাজ করে সেখানে ভেরিয়েশন হতেই পারে। তাহলে সরকারের নির্ধারিত মূল্য আর বাজার মূল্য এক থাকল কোথায়? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা না বুঝে প্রশ্ন করবেন না।
এ সময় পাশ থেকে খাদ্যমন্ত্রী বলে উঠেন, যৌক্তিক মূল্য মানে প্রডাকশন (উৎপাদন) মূল্য। তারপরে কত হাত যে বদলায়। বাজারে কাঁচামরিচের দাম কত এবং মানুষের মিছিল সমাবেশ না করাটা সহনীয়তা পরিমাপ করে কিনা–একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আপনি কয়টা কাঁচামরিচ খান? আমি তো একটাও খাই না। অর্ধেক খেয়ে রেখে দেই। অতীতে একটু দাম বাড়লে রাস্তা গরম হয়ে যেত। এখন এগুলো তো নাই। আপনাদের ইরেলিভেন্ট কোনো প্রশ্ন করার প্রয়োজন নাই। আমি সাংবাদিক না হইলেও আমি জানি হোয়াট ইজ দ্য জার্নালিজম।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখানে বসেছি বাজারটা যেন স্থিতিশীল রাখা যায়। কিন্তু আপনারা যদি এভাবে হেডলাইন খোঁজার চেষ্টা করেন তাইলে তো হবে না।
বৈঠকে যা কিছু আলোচনা : ১. বোরোতে চালের উৎপাদন ভালো হয়েছে, চালের কোনো ঘাটতি নাই, দামও স্থিতিশীল। ২. আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে, আমদানি উন্মুক্ত আছে। ৩. পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত আছে, কোনো সমস্যা হবে না। ৪. ডিমের দাম কিছুটা বেশি, হিমাগারে ডিম মজুদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি তদারকি করা হবে। ৫. মনিটরিং চলছে, আরও জোরদার করা হবে।