বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

গাজার স্কুলে ফের বিমান হামলা, নিহত ১৬

গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা, ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কয়েক ডজন। হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত আশ্রয় কেন্দ্রে ওই স্কুল ভবন ছিল হাজারো বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা আল–জাওনি স্কুল এলাকার বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যেসব অবকাঠামোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছিল। খবর বিডিনিউজের।

এদিকে ওই ক্যাম্পের আরেক বাড়িতে পৃথক বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। নুসেইরাত স্কুলে হামলার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ ও ধূলার মধ্যে বয়স্ক ও শিশুরা চিৎকার করছে। তারা আহতদের পাশে দাঁড়াতে ছোটাছুটি করছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে বলেছেন, ব্যস্ত একটি বাজার সংলগ্ন ওই স্কুল ভবনের উপরের তালাগুলোকে নিশানা করে হামলা চালায় ইসরায়েল। বিবিসি জেনেছে, সাত হাজারের মত মানুষ ওই ভবনে আশ্রয় নিয়েছিল। এক নারী সাংবাদিকদের বলেছেন, এমন কিছু শিশুর প্রাণ গেছে, যারা হামলার সময় ভবনটিতে কোরআন পড়ছিল। কোনো ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই তারা হামলা করেছে। এ নিয়ে চতুর্থবার তারা স্কুলটিতে হামলা চালাল। বিবিসি লিখেছে, একটি সূত্র তাদের বলছে, হামাস পুলিশ ব্যবহার করে এমন একটি কক্ষকে হামলার নিশানা করা হয়েছিল। তবে দাবির সত্যতা বিবিসি যাচাই করতে পারেনি। হামাস বলছে, শনিবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে স্থানীয় পাঁচ সাংবাদিকও রয়েছেন তাদের পরিবারকেও নিশানা করা হয়েছিল। সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের হিসাবে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলার পর যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে গাজায় শতাধিক সাংবাদিকের প্রাণ গেছে। আর হামাস বলছে, নতুন করে পাঁচজন মারা যাওয়ায় যুদ্ধের মধ্যে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫৮ জনে। এক এক্স পোস্টে দেওয়া বিবৃতিতে আইডিএফ স্কুল ভবনে হামলার কথা স্বীকার করেছে।

তারা বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে তারা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার মধ্যে আকাশ থেকে সুনির্দিষ্ট নজরদারি এবং বাড়তি গোয়েন্দা তৎপরতা রয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, হামাস যোদ্ধারা ওই স্থানটিতে লুকিয়ে থেকে আইডিএফ সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল। ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার জন্য হামাস বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করছে, বেসামরিক জনগণকে মানব ঢাল বানাচ্ছে এভাবে তারা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চলেছে। অন্যদিকে হামাস হামলাকে বাস্তুুচ্যুত অসহায় বেসামরিক মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ বলে বর্ণনা করেছে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে ফিলিস্তিনের স্বাধানতাকামী সংগঠনটি বলেছে, হতাহতদের মধ্যে অনেক নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি আছেন। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত কয়েকদিনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির খবর মিলছে। ইসরায়েল বলেছে, জিম্মি মুক্তির প্রশ্নে হামাসের সঙ্গে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে তারা মধ্যস্থতাকারী দল পাঠাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com