বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন
ট্রেভিস হেডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। টেন্ট ব্রিজে বৃহস্পতিবার রাতে ৩১৬ রানের লক্ষ্য ৩৬ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ১২৯ বলে অপরাজিত ১৫৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হয়েছেন হেড। ২০টি চার ও ৫টি ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটি। এর আগে বল হাতে তিনি নেন ইংল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট। হেডের ১৫৪ এই সংস্করণে ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। ২০১৩ সালে সাউথ্যাম্পটনে শেন ওয়াটসনের ১৪৩ ছিল আগের সর্বোচ্চ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ আট ওয়ানডে ইনিংসের মধ্যে ছয়বারই পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন হেড। যেখানে সেঞ্চুরি দুটি, আর দুটিই ছাড়াল দেড়শর সীমানা। ২০২২ সালে মেলবোর্নে করেছিলেন ১৫২। ৬১ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন লাবুশেন। বল হাতে তার প্রাপ্তি ৩ উইকেট। ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ নেন ৪টি। ইংল্যান্ডের ইনিংসকে ভাগ করা যায় দুই ভাগে। প্রথম ২৫ ওভারে তারা করে ২ উইকেটে ১৭০ রান। পরের ২৪.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৮। সর্বোচ্চ ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন বেন ডাকেট। তার ৯১ বলের ইনিংস সাজানো ১১টি চারে। প্রথমবারের মতো কোনো ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষের ৯ উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা। ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনো ওয়ানডেতে স্পিনারদের সবচেয়ে বেশি উইকেটে নেওয়ার ঘটনাও এটিই। লাবুশেনের সমান ৩টি উইকেপ নিয়েছেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পাও। অসুস্থতার কারণে গ্লেন ম্যাঙওয়েল, মিচেল স্টার্ক ও জশ হেইজেলউডকে এই ম্যাচে পায়নি অস্ট্রেলিয়া। ইনজুরির কারণে ছিলেন না জশ ইংলিসও। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাকেট ও ফিল সল্টের ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পায় ইংল্যান্ড। সল্টকে বোল্ড করে প্রথম উইকেটের দেখা পান অভিষিক্ত বাঁহাতি পেসার বেন ডোয়ার্শিস। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এরপর দলকে এগিয়ে নেন ডাকেট ও উইল জ্যাকস। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ১০১ বলে ১২০ রানের জুটি। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৬ বলে ৬২ রান করা জ্যাকসকে ফেরান ক্যারিয়ারের শততম ওয়ানডে খেলতে নামা জ্যাম্পা। জস বাটলারের ইনজুরির কারণে এই সিরিজে নেতৃত্ব পাওয়া হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ডাকেট ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। ৩২ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ২ উইকেটে ২১১। ২০১৮ সালে এই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে ৪৮১ রান করেছিল ইংল্যান্ড। এবার অন্তত সাড়ে তিনশ রান হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল তখন। কিন্তু পরের ওভার থেকে পাল্টে যেতে থাকে চিত্র। আক্রমণে এসে লাবুশেন নিজের প্রথম দুই ওভারে বিদায় করেন সেঞ্চুরির দুয়ারে থাকা ডাকেট ও ব্রুককে । ডাকেট করেন ৯৫ রান। আর ব্রুক করেন ৩১ বলে ৩৯ রান। দুজনই ফিরতি ক্যাচ দেন বোলারকে। এরপর আর কোনো জুটি ত্রিশ ছুঁতে পারেনি। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে দুই বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ১৭.১ ওভারের মধ্যে ১০২ রানে শেষ ৮ উইকেট হারায় তারা। ইংলিশদের সংগ্রহ দাড়ায় ৩১৫ রান।
৩১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক মিচেল মার্শকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় উইকেটে হেড ও স্টিভেন স্মিথ যোগ করেন ৭৬ রান। স্মিথ বিদায় নেন ৩২ রান করে। চারে নেমে তার সমান রান করে ফিরেন ক্যামেরন গ্রিনও। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। ৫০ বলে ফিফটি করা হেড পরের পঞ্চাশ করেন ৪২ বলে। তার ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি এটি। দেড়শতে পা রাখেন তিনি ১২৩ বলে। লাবুশেন ফিফটি করেন ৪২ বলে। অবিচ্ছিন্ন ১৪৮ রানের জুটিতে দলের জয় নিয়ে ফিরেন তারা। আগামীকাল রোববার লিডসে হবে দ্বিতীয় ম্যাচ।