বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন
শাহরুখপুত্র আরিয়ান খানকে মুক্তি দিতে যে ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হতে যাচ্ছে সে কথা নিজ কানে শুনেছিলেন প্রভাকর সইল। তার মধ্যে আট কোটি টাকা যে মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনসিবির কর্তা সমীরকে দেওয়া হবে, তা-ও তিনি জেনেছিলেন বলে ফের দাবি করলেন সইল। মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী সইল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, পুরো কথোপকথনটির প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে। চাইলে সেই প্রমাণ তিনি প্রকাশ্যে আনতে পারেন।
বেসরকারি গোয়েন্দা কেপি গোসাভির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সইল সোমবার একটি হলফনামা পেশ করে জানান, তিনি ভুলবশত গোসাভির একটি কথোপকথন শুনে ফেলেছিলেন। যেখানে জনৈক শ্যাম ডি’ সুজাকে গোসাভি বলছেন, ‘আট কোটি যাবে এনসিবির জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের কাছে।’
সইলের দাবি, ওই কথোপকথনে আরিয়ানকে মাদক মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ২৫ কোটি টাকার লেনদেনের কথাও বলেছিলেন গোসাভি। সইল জানিয়েছেন, তিনি টাকার লোভে বা রাজনৈতিক চাপে পড়ে এ কথা বলেননি। তাঁর হাতে প্রমাণ আছে। গোসাভি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেই তিনি সেই প্রমাণ প্রকাশ্যে আনবেন।
এনসিবি কর্তা সমীরকে ৮ কোটি টাকা দেওয়া নিয়ে সইলের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল এনসিবি। সমীরের কলঙ্কমুক্ত কর্মজীবনের কথা জানিয়ে এনসিবি বলেছিল, সইল টাকার লোভে বা অন্য কোনো কারণে মিথ্যা বয়ান দিচ্ছেন। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এনসিবির সেই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিলেন সইল।
সইল বলেন, ‘গোসাভি আমাকে কোনো টাকা দেননি। গত ৬ সেপ্টেম্বর আমার মেয়ের জন্মদিনে বেতনের ছয় হাজার টাকা দিয়েছিলেন গোসাভি। পরে দুই দফায় ১৫ হাজার এবং তিন হাজার টাকা দেন। এ ছাড়া আমি ওর থেকে কোনো টাকা নিইনি। কোনো মন্ত্রী আমাকে চাপ দেননি। আমি যা জেনেছিলাম, তা অভিযোগ হিসেবেই মুম্বাইয়ের সহর থানায় জানাই। এরপর গোসাভি আত্মসমর্পণ করলে বাকি কথা বলব।’
প্রসংগত, এই গোসাভির সঙ্গেই শাহরুখ তনয়ের একটি সেলফি আরিয়ানের গ্রেপ্তারের পর ভাইরাল হয়েছিল। সইল হলফনামায় জানিয়েছেন, আরিয়ানের গ্রেপ্তারের পর শাহরুখ খানের ম্যানেজারের সঙ্গে ‘গোপনে’ বৈঠকও করেছিলেন এই গোসাভি।
জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার (এনসিবি) কর্তা সমীরের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালেই ফের অনিয়মের অভিযোগ আনেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। তিনি ফের দাবি করেন, তথাকথিত ‘ঝকঝকে কর্মজীবন’-এর আড়ালে সমীর বহুবার নিয়ম ভেঙেছেন। সমীরের পর পর নিয়ম ভাঙার ঘটনাকে ‘স্পেশাল ২৬’ বলেও কটাক্ষ করেছেন নবাব। এই মর্মে একাধিক টুইট করেন নবাব।
সোমবার রাতে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় সমীরকে। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির এনসিবি দপ্তরে যান সমীর। কেন তাঁকে জরুরি তলব করা হলো, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে মাদক-মমলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন সমীর। শুধু বলেছেন, ‘কোনো তলব নয়, কিছু কাজের জন্য দিল্লিতে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি এক শ শতাংশ সেই তদন্তে সহযোগিতা করব। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’