শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন

এ রকম কতজন পিকে হালদার আছে, প্রশ্ন ফখরুলের

বিদেশে অর্থ পাচারকারীসহ তাদের মদদদাতাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন এ রকম কতজন পিকে হালদার আছে, আর এ রকম কতজন মানুষ আছে? আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি যে, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা দেশ থেকে লুট করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা জানতে চাই যে, এই ধরনের (পিকে হালদারের মতো) হাজার হাজার কোটি টাকা কত পাচার হয়েছে। একদিনে তো পাচার হয়নি। কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে পাচার হলো, কারা তার সঙ্গে জড়িত ছিল, কারা মদদ দিয়েছে-সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা আজকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি’।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে এই যে দুর্নীতি হচ্ছে, চুরি হচ্ছে, ডাকাতি করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে তা অবশ্যই তদন্ত করে বের করে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। সুযোগ পেলেই বিএনপির লোকদের হয়রানি আর কিছু চুনোপুঁটি লোককে ধরে হয়রানি করা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে জনগণের সামনে এ ধরনের যারা বড় বড় আছেন বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের তদন্ত করে তাদের সামনে আনতে হবে, আইনের আওতায় আনতে হবে’।

তিনি বলেন, ‘আজকের নিশ্চয়ই আপনি খবরের কাগজ খুলে দেখেছেন যে, একজন পিকে হালদার যিনি হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাকে পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা ভালো কথা। আমরা খুবই… কিছুটা হলেও যে একজন যিনি টাকা পাচার করেছেন তাকে ধরা হয়েছে ভারতে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি নিজেই বলেছেন, ফরিদপুরের একটা সম্মেলনে যে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা পাচার করেছে তাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না। তার মানে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের লোকেরা তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে’।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে হলে আমাদের সব ধর্মের, মতের, রাজনৈতিক দলের লোকদের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের পরাজিত করতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে এক জোটে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকার যারা আমাদের দেশে জোর করে ক্ষমতায় চেপে বসে আছে তাদের সরিয়ে এখানে সত্যিকার অর্থে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা সংসদ এবং সরকার গঠন করি-এটাই হচ্ছে আমাদের এখন সবচেয়ে বড় কাজ। এই বড় কাজটা করার জন্য আমাদের সবাই এগিয়ে আসতে হবে। আসুন এই পবিত্র দিনে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি’।

বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানান দলটির মহাসচিব।

বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের বৌদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। এরপর কমলাপুর আন্তর্জাতিক ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারের বিদর্শাচার্য এস শাসনবংশ মহাথের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রার্থনা করেন।

পরে মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের সুনন্দ মিত্র থের বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও জিয়া পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, জন গোমেজ, অমলেন্দু দাস অপু, আবদুল বারী ড্যানী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তরফ থেকে মনীষ দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া, উদয় কুসুম বড়ুয়া, প্রবীন চন্দ্র চাকমা, চন্দ্র গুপ্ত বড়ুয়া, সনত তালুকদার, রনজিত বড়ুয়া, অনিমেষ চাকমা রিংকু, জয়ন্ত বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, পারদর্শী বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুন্ড, বীথিকা বিনতে হোসাইন, তরুন দেসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মিষ্টি দিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের আপ্যায়ন করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com