সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪০ অপরাহ্ন

খবরদারি কমিয়েছে পদ্মা সেতু, মর্যাদার আসনে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এর প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সরকার প্রধানের দৃষ্টিতে এই সেতু উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর ‘খবরদারি’ কমিয়েছে, বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

গতকাল শুক্রবার বিকালে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এক সুধী সমাবেশে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এক যুগ আগে যার বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তের কারণেই উন্নয়ন সহযোগীরা সরে যাওয়ার পর সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ হয়েছে। এতে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ সহজ হয়েছে। বিরাট এক অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য বেড়েছে। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে সড়কপথে বাংলাদেশে যোগাযোগের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ২০২৩ সালে সালে চালু হয় রেলপথ। খবর বিডিনিউজের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টোলের মাধ্যমে যে টাকা আয় হয়েছে, সেটা টাকার অংক দিয়ে বিচার করব না। কারণ এই সেতু আমাদের গর্বের সেতু, টাকার অংক দিয়ে বিচার করার নয়। এই একটা সিদ্ধান্ত (নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ) বাংলাদেশকে অন্তত সেই মর্যাদা দিয়েছে যে, আগে যারা কথায় কথায় আমাদের ওপর খবরদারি করত আর ভাব এমন ছিল যে, এরা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারবে না; সেই মানসিকতাটা বদলে গেছে। এখন বাংলাদেশ শুনলে আন্তর্জাতিকভাবে সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। এই সেতু নির্মাণের পরে বাংলাদেশের মানুষ এখন গর্ব করে আন্তর্জাতিকভাবে বুক ফুলিয়ে চলতে পারে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত–সমৃদ্ধ–স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। যতই বাধাই আসুক, সব প্রতিবন্ধকতা ভেদ করে লাল সবুজের পতাকা বিশ্বের বুকে গর্বের সঙ্গে উড়বে।

পেছনের কথা : ২০০১ সালে ক্ষমতা ছাড়ার বছরে নকশা ও অর্থায়নের বিষয়টি চূড়ান্ত না করেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ওই বছর বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসার পর প্রকল্পটি আর গতি পায়নি। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একনেকের সভায় ১০ হাজার কোটি টাকায় কেবল কংক্রিটের সড়ক সেতু করার প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নকশ পরিবর্তন করে। স্টিল দিয়ে দোতলা সেতু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার নিচ দিয়ে রেল চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যায়। আবার জমি অধিগ্রহণের খরচ বেড়ে যায় তিন গুণ। দর দেওয়ার বিষয়ে সরকারের নীতির কারণে তাদের পুনর্বাসন ও নদী শাসনেও বাড়ে ব্যয়। শেষ পর্যন্ত ৩২ হাজার কোটি টাকায় নির্মাণ হয়েছে সেতুটি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com