শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

বৃষ্টির শুরুতেই টেকনাফে চলছে নির্বিচারে ব্যাঙ শিকার

কক্সবাজারের টেকনাফে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলি জমি, মাঠ, পতিত জমিতে ব্যাঙের দেখা মিলেছে। মাঠ ভরে গেছে হলুদ কোলা ব্যাঙে। পুরো মাঠ হলুদ হয়ে গেছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে শোনা যায় ব্যাঙের ডাকাডাকি।

এদিকে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়ের সদস্যরা নির্বিচারে ব্যাঙ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

কোলা ব্যাঙ নিশাচর প্রাণী। এটি সোনা ব্যাঙ বা ভাউয়া ব্যাঙ নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম Asian Bull Frog এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hoplobatrachua tigerinus। এটি Dicroglossidae পরিবারের ও Hoplobatrachus গণের অন্তর্ভুক্ত উভচর প্রাণী। বাংলার পথে-প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা কোলা ব্যাঙ অন্যতম কৃষি উপকারী প্রাণী।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই ব্যাঙের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পোকামাকড় খেয়ে ফসলের সুরক্ষা করে। ফলে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি অনেক জীবজন্তু এবং পাখির খাদ্য এই কোলা ব্যাঙ। যা খাদ্য-শৃঙ্খলের সহায়ক হয়ে জীবজগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

কিন্তু ব্যাপক কীটনাশক ব্যবহার এবং বন-জঙ্গল উজাড় করায় জীববৈচিত্র্য রক্ষাকারী ব্যাঙ বিলুপ্তির পথে। প্রতিনিয়তই নষ্ট হচ্ছে এদের বাসস্থান ও প্রজনন-আশ্রয়গুলো। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কোলা ব্যাঙসহ নানান প্রজাতির কৃষি উপকারী ব্যাঙ।

নির্বিচারে ব্যাঙ নিধনে টেকনাফের স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহল শঙ্কা প্রকাশ করেন। এইভাবে ব্যাঙ নিধন কার্যক্রম চলমান থাকলে জমির উর্বরতা নষ্ট হবে।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী আমির হোসেন ও মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চারজন তরুণ চার বস্তা কোলা ব্যাঙসহ নানা প্রজাতির ব্যাঙ নিয়ে শামলাপুর বাজার হয়ে হরিখোলা যাচ্ছিল। এ সময় তাদের পথ গতিরোধ করে সতর্ক করা হয়। পাশাপাশি ব্যাঙ নিধনের ফলে পরিবেশের ক্ষতিকর বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়া হয়। তাদের অভিযোগ, বিশেষ করে চাকমা সদস্যরা নির্বিচারে ব্যাঙ নিধনে জড়িত।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক নাজমুল হুদার কাছে ব্যাঙ নিধনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি মৎস্য বিভাগে অবহিত করতে বলেন। টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে অবহিত করলে তিনি বন বিভাগের দায়িত্ব বলে এড়িয়ে যান।

টেকনাফ উপজেলা বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এটি পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তারপরও আমাদের জানালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com