সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

মার্টিনেজকে কাছে পেয়ে মহাখুশি মাশরাফি

বাংলাদেশে যে কত মানুষ আর্জেন্টিনার ভক্ত তার কেউ বলতে পারবে না। তবে ৪ বছর পর পর যখন ফুটবল বিশ্বকাপ খেলা শুরু হয় তখন দেখা মিলে। তখন লাখ লাখ ভক্ত আর্জেন্টিনার সাফল্য কামনায় রাত জেগে খেলা দেখেন। আর সে দলের পক্ষে স্লোগান তুলেন। সেই আর্জেন্টিনা দলের মহা তারকা এলেন বাংলাদেশে। তার সঙ্গে দেখা হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

মাশরাফি বিন মুর্তজা আর্জেন্টিনার ভক্ত তা জানে না কেউ। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে শিরোপার অপেক্ষা দূর হয়েছিল। অপেক্ষা দূর হয়েছিল মাশরাফির।

নিজের প্রিয় দলকে বিশ্বকাপ জিততে দেখবেন এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক নিজেও। সেই স্বপ্ন কাতারে পূরণ করেছেন মেসি, ডি মারিয়া, এমিলিয়ানো মার্টিনেজরা। মাশরাফির এবং কোটি ফুটবলপ্রেমির স্বপ্ন পূরণের অন্যতম নায়ক মার্টিনেজ এখন বাংলাদেশে।

১১ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে সোমবার ভোরেই বাংলাদেশে এসেছেন। সকালে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার। যেখানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মাশরাফি। মেয়ে হুমায়রা ও ছেলে সাহেলকে নিয়ে মাশরাফি সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন।

খুব কাছ থেকে তারা দেখেছেন মার্টিনেজকে। ছবি তুলেছেন। সাদা-নীল জার্সিতে পেয়েছেন অটোগ্রাফ। অল্প কিছুক্ষণের জন্য মার্টিনেজকে কাছে পেয়ে মুগ্ধ মাশরাফি। এত আন্তরিকতা দেখাবেন তা ভাবতেও পারেননি তিনি।

মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করার পর বিমুগ্ধ হয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ফেসবুকে লিখেছেন মাশরাফি, ‘এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।’

‘সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে! সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ঐ হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করলো!’

‘আজকে সে সাক্ষাতের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে।’

‘আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, ‘এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।’

‘এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগণিত ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে।’

‘পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাল্লাহ।’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com