শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন
গত তিনদিন ধরে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স জ্বলছে। পুলিশের গুলিতে এক কিশোর নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। জানা যায়, সেই কিশোর ট্রাফিক আইন অমান্য করায় তাকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। সেই কিশোর আফ্রিকান। প্রথমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হলেও ক্রমেই এই বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেই। প্রেসিডেন্ট ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। এবং যেই পুলিশ ওই কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে সেই পুলিশকেও হত্যা করা হয়েছে। এই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ফ্রান্সে। এই আন্দোলন সরকার হঠাৎও আন্দোলনে রূপ নিতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিরোধী নেতারা।
পুলিশের গুলিতে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এক কিশোর হত্যার পর থেকে বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো উত্তাল রয়েছে ফ্রান্স। সারা দেশে ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না ফরাসি কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি ২০০৫ সালের মতো অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
ফ্রান্সের জাতীয় পুলিশ বাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে বলেছে যে তারা মার্শেই, লিওঁ, পাও, তুলুস ও লিলি নগরীতে নতুন করে বিক্ষোভের মুখে পড়েছে। তারা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলিবর্ষণ করলে বিক্ষোভকারীরা পাল্টা আতশবাজি নিক্ষেপ করে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার পুলিশ ১৭ বছর বয়স্ক নাহেল এম নামের কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে। কিশোরটি আলজেরিয়ান ও মরক্কান বংশোদ্ভূত। ট্রাফিক স্টপে তাকে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ঘটে প্যারিসের পশ্চিম দিকে নাঁতেরে উপশহরে। বিক্ষোভকারীরা সেখানে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করে, পাথর নিক্ষেপ করে। তারা ’নাহেলের প্রতিশোধ’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় বিভিন্ন ভবন, বাস শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থানে। তাছাড়া একটি ব্যাংকেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। দমকল বাহিনী অবশ্য দ্রুততার সাথে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।
প্যারিসে নাইকির একটি দোকানে লুটপাট হয়, রুই ডি রিভোলি শপিং স্ট্রিটে ব্যাপক ভাংচুর হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মধ্য প্যারিসের ক্লামার্টের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার পর্যন্ত রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এবারের দাঙ্গা ২০০৫ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। দুই কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যার জেরধরে সেবার তিন সপ্তাহ ধরে দাঙ্গা চলে। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করতে ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাককে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হয়েছিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল ছয় হাজার লোককে। সূত্র : আল জাজিরা