বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নগরকন্ঠ.কম : জঙ্গিদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠালেও সেখানে তারা সংশোধন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় দুই দিনব্যাপী উগ্রবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
আইজিপি বলেন, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির অবাধ ও সহজলভ্য ব্যবহারের ফলে পথভ্রষ্ট, নীতিভ্রষ্ট ও বিকৃতমনা আদর্শ তথা ভয়ংকর-বিপজ্জনক উগ্রবাদও দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করেছে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। সে জন্য আজ উগ্রবাদ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও আঞ্চলিক গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক রূপ লাভ করেছে। অশিক্ষা, দরিদ্র, ধর্মের অপব্যবহার ও উগ্রসাম্প্রদায়িকতা সহিংস উগ্রবাদের দিকে নিয়ে যায়। উগ্রবাদ প্রসারে আমরা দেখেছি ভূরাজনৈতিক ও সাম্রাজ্যবাদী চেতনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, উগ্রবাদের মতো একটি বিকৃত ধ্বংসাত্মক আদর্শ ও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস। সম্মিলিত প্রয়াসের লক্ষ্যে আজ জাতীয় এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, ২০১৬ সালের পর দেশে বেশকিছু অভিযান হয়েছে। আমরা জঙ্গিদের এনকাউন্টার করেছি, ধ্বংস করেছি বলেই এর সুফল এখন ভোগ করছি। কিন্তু বাইরে থেকে আমরা উগ্রবাদীদের চিহ্নিত করি, মামলা দেই, গ্রেফতার করে জেলে দেই। কিন্তু সেখানে তাদের সংশোধন হচ্ছে না। এ জায়গায় আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। আমি সম্মেলনে এ ধরনের কোনো এনজিও দেখলাম না, যারা কারাগারে আসামিদের সংশোধনের বা ডি-র্যাডিকালাইজেশনে কাজ করে। কারাগারে এ আসামিদের ডি-র্যাডিকালাইজড করতে আপনাদের উদ্যোগ নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে যদি আরেকটি হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা ঘটত, তাহলে সব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যেত। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর প্রজেক্টের বিদেশি এক্সপার্টদের ধরে রাখা যেত না। তবে আমরা এ ধরনের কোনো ঘটনা হতে দেইনি।
তিনি বলেন, আমি যখন এন্টিটেরোরিজম ইউনিটে ছিলাম তখন দেখেছি উগ্রবাদে জড়িত ৯০ শতাংশ আহলে হাদিস সম্প্রদায়ের। তারা বলেছে, শুধু তাদের সম্প্রদায়ের বড় হুজুরের কথা শুনবে ও মানবে। আলেমদের একাংশকে তারা ‘কাফের’ বলে মনে করে। তাই উগ্রবাদ রুখতে ধর্মীয় নেতাদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
সম্মেলনের সভাপতি ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে আগত অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দূর করে এখন থেকে একযোগে কাজ করে অধিকতর ভালো ফল পাওয়া যাবে।
নগরকন্ঠ.কম/এআর