শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

সেমিফাইনালে মুখোমুখি ফ্রান্স-স্পেন

জমজমাট লড়াই শেষে ইউরো কাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স এবং স্পেন। এই দুই পরাশক্তি ফাইনালের টিকিট পেতে আগামী ১০ জুলাই বুধবার রাত ১টায় পরস্পরের মুখোমুখি হবে। কোয়ার্টার ফাইনালের পেনাল্টি শ্যুট আউটে পর্তুগালকে ৫–৩ গোলে পরাজিত করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠে ফ্রান্স। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিট ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র থাকার পর শেষ পর্যন্ত কিলিয়ান এমবাপের দল ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালকে বিদায় করে শেষ চারের টিকেট পায়। এই ম্যাচটি ছিল ইউরোতে পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনাল্ডোর শেষ ম্যাচ। ফ্রান্স তাদের পেনাল্টি শ্যুট আউটের প্রতিটিতেই সফল হয়েছে। অন্যদিকে হুয়াও ফেলিক্সের তৃতীয় শটটি মিস হলে পর্তুগালের বিদায় নিশ্চিত হয়।

সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এমবাপে গুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টি শটটি মিস করেছিলেন। কাল শ্যুট আউটের আগেই তাকে ডাগ আউটে উঠিয়ে নেন কোচ দিদিয়ের দেশ্যম। তার স্থানে অতিরিক্ত সময়ের মাঝামাঝিতে মাঠে নামেন ব্র্যাডলি বারকোলা। ফ্রান্সের হয়ে স্পট কিক থেকে গোল করেছেন বারকোলা, ওসমানে ডেম্বেলে, ইউসুফ ফোফানা, জুলেস কুন্ডে ও থিও হার্নান্দেজ। ফরাসি কোচ দেশ্যম ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে দারুণ গর্বিত। এমনকি সবকিছু সঠিক ভাবে করতে না পারলেও আমরা ম্যাচ ছেড়ে দেইনি। আরো একবার আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে। আশা করছি সবকিছু শেষ পর্যন্ত ঠিক ভাবেই সম্পন্ন হবে।’ ইউরোতে নিজের সেরা ফর্ম খুঁজতে থাকা এমবাপের জন্য রাতটা ছিল দারুণ হতাশার। তবে ৩৯ বছর বয়সী রোনাল্ডো শেষ বারের মত ইউরোতে ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। এটা তার ষষ্ঠ ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল। কিন্তু জার্মানির মাটিতে ইউরোতে নিজের সর্বোচ্চ ১৪ গোলের রেকর্ডকে সমৃদ্ধ করতে পারেননি সিআর সেভেন। এবারের আসরে পর্তুগালের পাঁচ ম্যাচের কোনটিতেই গোল করতে পারেননি রোনাল্ডো। এদিন পর্তুগালের হয়ে প্রথম পেনাল্টি শটে তিনি গোল করেছিলেন। কিন্তু তার দল শেষ পর্যন্ত আর নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। আগের ম্যাচে পর্তুগালের গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা স্লোভেনিয়ার তিনটি পেনাল্টি সেভ করলেও এদিন একটিও আটকাতে পারেননি। এদিকে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে মিকেল মেরিনোর অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তের গোলে জার্মানিকে ২–১ ব্যবধানে পরাজিত করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে অপ্রতিরোধ্য স্পেন। এই জয়ে রেকর্ড চতুর্থ ইউরো শিরোপা জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখলো স্প্যানিশরা। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটিতে প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। ৫১ মিনিটে ১৬ বছর বয়সী লামিন ইয়ামালের নিখুঁত পাসে ডানি ওলমোর গোলে এগিয়ে যায় লা রোজারা। ম্যাচ শেষের ১৪ মিনিট আগে নিকলাস ফুলক্রুগ পোস্টে বল লাগান। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি। স্বাগতিকরা যখন বিদায়ের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল তখনই ৮৯ মিনিটে জসুয়া কিমিচের সহায়তায় ফ্লোরিয়ান রিটজ দলকে সমতায় ফিরিয়ে ম্যাচটি নিয়ে যান অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ে দুই দল সমানভাবে আক্রমণ চালিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১১৯ মিনিটে ওলমোর লফটেড পাসে মেরিনো গোল করে সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন। বড় আসরে প্রায় এক দশক যাবত ব্যর্থতার পর ঘরের মাঠে জার্মানির সামনে সুযোগ এসেছিল হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবার। কিন্তু শেষ আটে এসে স্বাগতিকদের সেই আশা পূরণ হলোনা। এই ম্যাচ শেষেই বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সমাপ্তি টেনে বিদায় নিয়েছেন দলের মধ্যমাঠের নির্ভরযোগ্য কান্ডারি টনি ক্রুস। ইউরোতে এ পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দুটি দলের লড়াই নিয়ে পুরো ফুটবল বিশ্বের মনোযোগ ছিল একটু অন্যরকম। তিনটি করে শিরোপা নিজেদের ঘরে তোলার পর স্পেন ও জার্মানি উভয় দলই এই রেকর্ডকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিল। অনেকেই এই ম্যাচটিকে অলিখিত ফাইনাল হিসেবে ধরে নিয়েছিল। যে লড়াইয়ে জুলিয়ান নাগলসম্যানের অধীনে পুনর্জাগরিত জার্মানিকে ছাড়িয়ে যায় ইন–ফর্ম স্পেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 Nagarkantha.com