বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নগরকন্ঠ.কম : মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে পাকবাহিনীর বুলেটে প্রাণ দিয়েছিলেন মানিকগঞ্জের উত্তর সেওতা গ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটো।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কিশোর মুক্তিযোদ্ধা টিটোর আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে হানাদার মুক্ত হয় সাভার। কিন্তু বিজয়ের ৪৮ বছরে সাভার মুক্ত দিবসে অকুতোভয় সেই বীর কিশোর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থলটি পড়ে রয়েছে অনেকটাই অবহেলায়।
১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর নবম পদাতিক ডিভিশনের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভার দুগ্ধ খামার গেট সংলগ্ন শহীদ টিটোর সমাধিটি ফলক উন্মোচন করেন।
এরপর থেকে স্বাধীনতার এই বীর শহীদের সমাধিটির ব্যাপারে নজর নেই স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের।
১৪ ডিসেম্বর সাভার মুক্ত দিবসে প্রতি বছর শুধু স্থানীয় সাংবাদিকরা এই সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসলেও খোঁজ মেলে না প্রশাসনের।
মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বলেন, শহীদ গোলাম দস্তগীর টিটোর সমাধিস্থলটি কোথায় তা আমার জানা নেই।
সাভার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী সোহেল রানা বলেন, কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটোর সমাধিস্থলটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণসহ যথাযথ মর্যাদায় এই দিনটি পালন করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
২নং সেক্টর কমান্ডার ও সাভার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আইনুদ্দিন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা টিটোর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সাভার হানাদার মুক্ত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, বিজয়ের ৪৮ বছরেও সাভার হানাদার মুক্ত দিবস পালনে উপজেলা প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।
এমনকি শহীদ টিটোর সমাধিতেও জানানো হয় না শ্রদ্ধা।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাভার হানাদার মুক্ত দিবস পালন না করার বিষয়ে জানতে চেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
স্থানীয় সাংবাদিক মোজাফফর হোসেন জয় বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় ১৪ ডিসেম্বর সাভার মুক্ত দিবসে স্থানীয় সাংবাদিকরা নিজ উদ্যোগে শহীদ টিটোর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। জাতির এই বীর সন্তানের সমাধিটির নাজুক অবস্থা। ধুলাবালি আর ময়লা-আবর্জনায় শ্রদ্ধা জানানোর পরিবেশ না থাকায় সংবাদকর্মীরা নিজেরাই ধুয়ে-মুছে পরিচ্ছন্ন করে শ্রদ্ধা জানান।
শহীদ টিটোর সমাধিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সমন্বয়কারী সময় টেলিভিশনের প্রতিনিধি মোজাফফর হোসেন জয়, আরটিভির জিয়াউর রহমান জিয়া, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নাজমুল হুদা, দেশ রূপান্তরের খোকা মুহাম্মদ চৌধুরী ও দৈনিক যুগান্তরের মতিউর রহমান ভাণ্ডারীসহ অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
নগরকন্ঠ.কম/এআর